‘কঠিন মনস্তাত্ত্বিক ধাক্কা থেকেই আহতদের বিষপানের চেষ্টা’

চারজন জুলাই যোদ্ধা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা, সামাজিক অবহেলা ও নিরাপত্তাহীনতার জেরে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বিষয়টিকে ‘কঠিন মনস্তাত্ত্বিক ধাক্কা’ হিসেবেই দেখছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। দীর্ঘদিনের অবহেলা, হতাশা ও একাকিত্বের চাপে পড়ে এই যোদ্ধারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশন।

রোববার (২৫ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জুলাই ফাউন্ডেশন এসব তথ্য জানায়।

বিবৃতিতে ফাউন্ডেশনটির সিইও লে. কর্নেল (অব.) কামাল আকবার জানান, আত্মহত্যার চেষ্টা করা যোদ্ধাদের মধ্যে একজন কিছুদিন আগেই বিদেশে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। যোদ্ধাদের এমন সিদ্ধান্ত শুধু তাদের ব্যক্তিগত দুর্বলতা নয়—বরং এটি একটি সামাজিক ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ।

এর আগে, ওই দিনই জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বিশেষ মতবিনিময় সভায় বসে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। সভায় যোদ্ধাদের স্বাস্থ্যসেবা, পুনর্বাসন ও সামাজিক মর্যাদা নিয়ে বিভিন্ন গঠনমূলক প্রস্তাব গৃহীত হয়। কিন্তু এর মধ্যেই সংবাদ আসে জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে চারজন বিষপান করেছেন।

ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের সহায়তায় আক্রান্তদের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমনকি ফাউন্ডেশনের সিইও নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আহতদের সেবার তত্ত্বাবধান করেন এবং অন্যান্য যোদ্ধাদের আশ্বস্ত করেন।

লে. কর্নেল (অব.) কামাল আকবার বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধারা আমাদের অহংকার। তারা যেন নিজেদের একাকী না ভাবেন, সেটি নিশ্চিত করাই এখন আমাদের প্রধান দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনা আমাদের হৃদয়কে নাড়িয়ে দিয়েছে। এটা কেবল দুর্ঘটনা নয়, বরং আমাদের দায়বদ্ধতা কতটুকু পূরণ হয়েছে—সে প্রশ্নও সামনে এনেছে। তাই এখন প্রয়োজন আরও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, যত্ন এবং কার্যকর পদক্ষেপ।’

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, যোদ্ধাদের জন্য মনোসামাজিক সহায়তা চালু করার পাশাপাশি একটি দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা কর্মসূচি হাতে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত আর কেউ নিতে বাধ্য না হন।

সংস্থাটি বলছে, ‘এই সাহসী যোদ্ধাদের জীবনের প্রতি ভালোবাসা ফিরিয়ে দিতে রাষ্ট্র ও সমাজের একযোগে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যেন তারা কখনোই আর নিঃসঙ্গতায় না হারিয়ে যান।’

এসএম

Share this news on:

সর্বশেষ

img

ত্রিদেশীয় সিরিজ

লঙ্কানদের ৬৭ রানে হারিয়ে বড় জয় জিম্বাবুয়ের Nov 20, 2025
img
নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে : আমানউল্লাহ আমান Nov 20, 2025
img
তেল ও গ্যাস অন্বেষণে সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ বানাবে পাকিস্তান Nov 20, 2025
img
বিএনপি ধর্ম বেচে রাজনীতি করে না : শামা ওবায়েদ Nov 20, 2025
img
সোনম কাপুরের বেবি বাম্প দেখে অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া স্বামীর! Nov 20, 2025
কঠিন কাজটাই সহজ করে দিয়েছে হামজা-শমিতরা Nov 20, 2025
বেবি বাম্পের ছবি পোস্ট করে খুশির বার্তা সোনমের Nov 20, 2025
img
জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ইরানের Nov 20, 2025
img
করাচির রহস্যময় অভিযান নিয়ে সিনেমা ধুরন্ধর Nov 20, 2025
ঢাকা ৮ আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন রিকশা চালক! Nov 20, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে চুক্তির সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের Nov 20, 2025
বিভিন্ন দাবি আদায়ে শিবিরের মাত্র ১৫–২০ জনের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন! Nov 20, 2025
যেই ৪টা কারণে রিযিক কমে যায় Nov 20, 2025
img
নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবার নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে : সারজিস Nov 20, 2025
img
শীত কবে থেকে বাড়তে পারে, আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা Nov 20, 2025
img
অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে অনফিল্ড আম্পায়ারের ভূমিকায় সৈকত Nov 20, 2025
img
সেনা আদেশে হস্তক্ষেপকারী ডেমোক্র্যাটদের মৃত্যুদণ্ড চান ট্রাম্প Nov 20, 2025
img
প্রস্রাব করা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল বিএনপি নেতার Nov 20, 2025
img
অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৮.৩৩ শতাংশ Nov 20, 2025
img
পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন দিব্যাভারতী Nov 20, 2025