এক সময় বাংলা চলচ্চিত্রে অসাধারণ সব সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন ওপার বাংলার খ্যাতিমান পরিচালক প্রভাত রায়। ‘শ্বেত পাথরের থালা’ ও ‘লাঠি’র মতো প্রশংসিত সিনেমার নির্মাতা তিনি। পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও সাফল্য পেয়েছেন একাধিক চলচ্চিত্রে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন এই গুণী পরিচালক। এক পর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে। পরে অবশ্য তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
এই কঠিন সময়ে মেয়ের অবদান ছিল চোখে পড়ার মতো। একতা ভট্টাচার্য সবসময় পাশে থেকেছেন বাবার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাত রায় মেয়ের প্রতি ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা আর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি একতা’র উদ্দেশে একটি খোলা চিঠিও লেখেন, যেখানে ফুটে উঠেছে একজন পিতার অপার স্নেহ ও জীবনদর্শন।
সেই খোলা চিঠিতে লিখেছেন, ‘জীবনের শেষ প্রান্তে সত্যি বলতে কিছুই আর তেমন গুরুত্ব পায় না। না জাতীয় পুরস্কার, না বড় বড় অনুষ্ঠান, না প্রিমিয়ার নাইট, না সেই ক্ষণস্থায়ী গ্ল্যামার। শেষবেলায় যেটা থেকে যায়, সেটা হল সন্তানের হাত, যেটা আমরা সবাই হয়তো শক্ত করে ধরে থাকতে চাই। যে নিঃস্বার্থভাবে পাশে দাঁড়ায় সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে। যার চোখে থাকে একটাই অনুরোধ “তোমাকে আমার জন্য বাঁচতেই হবে।’
তার কথায়, ‘এই সবের মধ্যেই ও ল্যাপটপ খুলে হাসপাতালে বসে অফিসের একাধিক কাজ করেছে। জুলাই অব্দি রয়েছে ৯টা ছবি মুক্তি, নাটকের কাজ আর তার সঙ্গে শুরু হয়েছে পুজোর বিজ্ঞাপনের কাজ। নিজের টিমের সাথে করিডোরে মিটিং করেছে, সমস্ত ডেডলাইন মিট করেছে। সাহসের সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছে।
‘একদম নীরবে, একেবারে একা। You are one of the most strongest and kindest souls I have ever known. Your Babi will always, always be mighty proud of you. আমি মন থেকে প্রার্থনা করি বিশেষ করে আমাদের চলচ্চিত্র জগতের মানুষদের জন্য।এখন যাদের আশেপাশে অনেক ভিড়, তারা যেন তাদের জীবনের শেষ দিনগুলো আমার মতন নিশ্চিন্তে, আনন্দে কাটাতে পারে।’
একতা প্রসঙ্গে প্রভাত রায় আরও লিখেছেন, ‘আমরা সবাই একদিন চলে যাবো, কিন্তু আসল কথা হল মুখে একটা হাসি আর মনে সেই তৃপ্তি নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া এটা ভেবে যে আমার জীবনে এমন একটা সন্তান ছিল, যে নিজের সমস্তটা নিংড়ে দিয়েছিল আমাকে ভালো রাখার জন্য, আমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। আমার দ্রুত সুস্থতার জন্য যারা প্রত্যেক বার অন্তর থেকে প্রার্থনা করেন তাদের অশেষ ধন্যবাদ জানাই। আগামী দিনে আমাদের দুজনের অসুখ বিসুখ এর সাথে অনেক লড়াই বাকি কিন্তু বলাই এর শুটিং হবে! কিছু মাস পরে হলেও, হবে।’
আরএ/টিএ