তুরস্কের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও ঘনীভূত হয়েছে। পাকিস্তানকে পরোক্ষ সহায়তা এবং সামরিক সহযোগিতার অভিযোগে দেশটির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে ভারতজুড়ে। এরই প্রেক্ষাপটে, তুরস্ক থেকে আপেল আমদানি বন্ধের দাবি জানালেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে নীতি আয়োগের দশম কাউন্সিল বৈঠক, যেখানে অংশ নিয়েছিল ভারতের ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ৩১টি প্রতিনিধি দল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে আয়োজিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে উঠে আসে বিকশিত ভারতের রোডম্যাপ থেকে শুরু করে কাশ্মীরের পহেলগামে হামলা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথাও।
এই বৈঠকে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি তুরস্ক ও আজারবাইজান থেকে আপেল আমদানির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে দেওয়া অনুরোধে তিনি বলেন, “কম দামে বিদেশি আপেল ঢুকছে ভারতের বাজারে, যার ফলে আমাদের রাজ্যের চাষিরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে তুরস্ক ও আজারবাইজান থেকে আপেল আমদানি বন্ধ করা প্রয়োজন।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব গুরুত্বসহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর অভিযোগে তুরস্কের প্রতি ভারতীয় জনসাধারণের মনোভাব বিরূপ হয়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, পহেলগাম হামলার আগেই পাকিস্তানকে সহায়তা দিতে সেনা প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়েছে তুরস্ক। সেই থেকেই ভারতে তুরস্কবিরোধী বয়কটের ডাক উঠেছে।
‘বয়কট তুরস্ক’ প্রচারের ফলে দেশটির পর্যটন খাতেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ভারতীয় পর্যটকদের মধ্যে তুরস্ক ও আজারবাইজানের বুকিং ৬০ শতাংশ কমেছে, অন্যদিকে ট্যুর বাতিলের হার বেড়েছে প্রায় ২৫০ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কূটনৈতিক বিরোধ এখন শুধু রাজনৈতিক স্তরে সীমাবদ্ধ নেই—তা সরাসরি প্রভাব ফেলছে দুই দেশের ব্যবসা ও পর্যটনে। ভারত সরকারের নীতিগত অবস্থান কঠোর হলে তুরস্কের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেই ধারণা।
এসএম