যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনপিআর (ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও)। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসির একটি ফেডারেল আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় এনপিআর অভিযোগ করেছে, তাদের সরকারি অনুদান কমাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, তা অবৈধ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ট্রাম্প এনপিআর এবং পিবিএসের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচারের অভিযোগ তোলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘করপোরেশন ফর পাবলিক ব্রডকাস্টিং’ প্রতি বছর বিভিন্ন সরকারি টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলের জন্য প্রায় ৫০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে পিবিএস পায় ১৭ শতাংশ এবং এনপিআর পায় ২ শতাংশ। তবে ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ তোলে, এসব মাধ্যম পক্ষপাতিত্বপূর্ণ কভারেজ দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি অনুদান বন্ধের নির্দেশ দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশ দেন ট্রাম্প।
মামলায় বলা হয়, প্রেসিডেন্টের অপছন্দের সংবাদ ও অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য এনপিআরকে শাস্তি দিতে এই আদেশ জারি করা হয়েছে, যা সংবিধানবিরোধী। সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী এনপিআর ও অন্যান্য স্বাধীন সম্প্রচারমাধ্যম যে মতপ্রকাশের অধিকার ভোগ করে, তা এই আদেশের মাধ্যমে খর্ব করা হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির (এক্সচেঞ্জ) ভিসার ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার গ্রহণ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ ভিজিটরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্ট, মন্তব্য ও শেয়ার ইত্যাদি খতিয়ে দেখার একটি কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া চালু করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, নতুন নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোনো অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ ভিসার সাক্ষাৎকার নির্ধারণ করা যাবে না।
নতুন যাচাই প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীদের ইনস্টাগ্রাম, এক্স (সাবেক টুইটার), টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে, যাতে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ কোনো তথ্য রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করা যায়।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন নির্দেশনা বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগ্রহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এতে দেশটির বহু বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে যেগুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
টিকে/টিএ