তারকাদের দান-দক্ষিণা অনেক সময়েই ক্যামেরার সামনে কিছু মুহূর্তের জন্য তৈরি এক অভিনয়ের মতো—দেখানো হয়, শোনা যায়, কিন্তু হৃদয় ছোঁয়া কোনও সত্য থেকে যায় না। সেই ছকের বাইরে হাঁটলেন রাশমিকা মান্দানা । কোনও ঘোষণা নয়, কোনও পোস্ট নয়, এমনকি কোনও সাক্ষাৎকারেও বলেননি এই গল্প। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির অন্দর থেকে জানা যাচ্ছে—নতুন প্রতিভাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহায়তা করেছেন তিনি, একেবারে নিঃশব্দে।
যারা সিনেমায় কাজ পেয়ে গিয়েও আর্থিক দিক থেকে নির্ভরশীল কাউকে পাচ্ছেন না, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাশমিকা। নিজে কোনও প্রচার চাননি। তবু এই খবর বেরিয়ে এসেছে, কারণ সহানুভূতির এমন নিদর্শন খুব বেশি দেখা যায় না। রাশমিকা নিজেই একবার বলেছিলেন, “আমার জার্নিতে কোনও অভিজ্ঞতাই ফেলনা নয়”—এই একটি লাইনের অর্থ যেন এবার নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছে।
কুর্গের ছোট্ট শহর থেকে উঠে আসা এক মেয়ে, যার পেছনে ছিল না কোনও ফিল্মি পরিবার, কোনও গডফাদার নয়, কেবল নিজের স্বপ্ন আর বিশ্বাস—তিনিই আজ অন্যদের স্বপ্নে হাত রাখছেন। প্রথম ব্রেকটা এল হঠাৎ করেই, কিন্তু তার পরের প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল চিন্তা, পরিশ্রম আর ধৈর্যের গল্প। তাই রাশমিকা আজও বলেন, “আগে থেকে সব কিছু জানার দরকার নেই, শুধু নিজের প্রতি বিশ্বাসটা থাকতে হয়।”
সিনেমায় যেমন ব্যস্ত, তেমনই ব্যস্ততাকে পেরিয়ে জীবনের কাছে দায়বদ্ধতা রাখার মধ্যেও খুঁজে পান আনন্দ। তাঁর সামনে একের পর এক বড় প্রজেক্ট—বলিউডে ‘থামা’, তেলুগুতে ‘কুবেরা’ ও ‘দ্য গার্ল ফ্রেন্ড’, আর ‘পুষ্পা ৩’-এর তো নাম শুনলেই হাইপ বাড়ে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও তিনি ভুলে যাননি, একসময় তিনিও ছিলেন একা, নতুন, অনিশ্চিত। তাই এখন নিজেকে সফল ভাবার চেয়ে, অন্যদের হাত ধরে তুলতে পারাই যেন তাঁর কাছে বড় সার্থকতা।
এই সময় যখন সিনেমা হয়ে উঠছে কেবল ‘বিজনেস মডেল’, তখন রাশমিকা দেখিয়ে দিচ্ছেন, মানুষ হিসেবে বড় হওয়াও সম্ভব—একটি হাসি, একটি সহানুভূতি, একটি নিরবে বাড়িয়ে দেওয়া সাহায্যের হাত দিয়েই। তিনি শুধু নায়ক-নায়িকার মধ্যেকার হাসির জন্য বিখ্যাত নন, হয়ে উঠছেন এই প্রজন্মের কাছে এক নীরব অনুপ্রেরণা—যিনি মনে করিয়ে দেন, আলো ছড়াতে শব্দের প্রয়োজন পড়ে না, সত্যিই যদি হৃদয় জ্বলে।
এফপি/এসএন