অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পরাজিত শক্তি এবং তাদের সহযোগীরা আমাদের ছোবল মারার জন্য ওত পেতে বসে আছে। যেকোনো মূল্যে একতাবদ্ধ থাকতে হবে।
শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসররা নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে পদে পদে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘তারা (পতিত ফ্যাসিবাদ) নানামুখি অপপ্রচারে লিপ্ত। তারা সবসময় চাইবে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৈরি হওয়া জাতীয় ঐক্যের শক্তিকে পরাভূত করতে, গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাকে লাইনচ্যুত করতে এবং বাংলাদেশকে পুনরায় করায়ত্ব করতে।
আমি আগেও বলেছি, আজ আবারও বলছি, আমরা একটা যুদ্ধাবস্থায় আছি। এখন আমাদের একতাবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা তাদের কিছুতেই এই সুযোগ দেব না।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় মর্যাদার বিরুদ্ধে যেকোনো আঘাত প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে প্রতিরোধের ঐক্যবদ্ধ সুদৃঢ় প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে।
আওয়ামী লীগের লুটপাটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প নিয়ে কি পরিমাণ লুটপাট হয়েছে, আপনারা সবাই জানেন। মেগা প্রকল্পগুলো যেন হয়ে উঠেছিল মেগা ডাকাতির প্রকল্প।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় মূল্যয়ন করে দেখেছি যে, প্রায় সব প্রকল্পেই ভৌতিক ব্যয় ধরা হয়েছে। শুধুমাত্র সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ, রেল মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ—এই পাঁচটি বিভাগেই ব্যয় সংকোচ করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা।
‘এই টাকা দিয়ে জ্বালানি খাতে সব বকেয়া মিটিয়ে দিয়ে বকেয়ার পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করে সব ধরনের ঋণের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের অগ্রাধিকার।’
ড. ইউনূস বলেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে আমাদের গুরুত্ব দিতেই হবে। তা না হলে এদেশকে আমরা যে স্থানে নিয়ে যেতে চাই, সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে রাজনৈতিক দল ও জনগণ আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন করছেন।
সবার মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে।
আরএম