কলম্বিয়া জাতীয় ফুটবল দল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে গভীর সংকটে। পেরুর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর ড্রেসিংরুমে এক নাটকীয় ঘটনার জন্ম দিয়েছেন ফরোয়ার্ড জন দুরান। কোচ নেস্তোর লরেঞ্জোকে আক্রমণ এবং সতীর্থদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার অভিযোগে শেষ পর্যন্ত তাকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ম্যাচ শেষ হওয়ার পর। উত্তেজিত দুরান ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন এবং কোচিং স্টাফের প্রতি অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন বলে দাবি করেন সাংবাদিক পাওলো অ্যারেনাস। জানা যায়, কোচ লরেঞ্জো তাকে শান্ত করতে এগিয়ে গেলে দুরান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং কোচের জামাকাপড় ধরে টানাটানি করেন।
সেই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এগিয়ে আসেন কলম্বিয়ার তারকা ফুটবলার জেমস রদ্রিগেস এবং জেফারসন লারমা। কিন্তু সংঘর্ষের একপর্যায়ে জেমস পড়ে যান মাটিতে। শেষ পর্যন্ত লারমাই দুরানকে নিবৃত করতে সক্ষম হন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
তবে ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। লারমা বলেন, ‘হাফটাইমে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। আমি আমার এজেন্টের কাছ থেকে শুনেছি যে আমার নাম জড়ানো হয়েছে, কিন্তু এটা পুরোপুরি মিথ্যা। দলের ভেতরে ভালো পরিবেশ বিরাজ করছে।’
একই সুরে কথা বলেন কোচ লরেঞ্জোও। ‘আমার বিরুদ্ধে বলা হয়েছে দুরানের সঙ্গে ঝগড়া করেছি, সতীর্থরা তাকে সরিয়েছে—এসব সম্পূর্ণ বানানো কথা। যারা এগুলো ছড়াচ্ছে, তারা ফুটবলের জন্য ক্ষতিকর। তাদের চিহ্নিত করা দরকার।”
দুরান নিজেও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোচ বা সতীর্থদের সঙ্গে কোনো বিরোধে জড়াইনি। আমার পিঠের পুরনো চোটটাই মূল কারণ, যার জন্য আমাকে স্কোয়াড ছাড়তে হয়েছে। মিডিয়াতে যেসব কথা ছড়ানো হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই।’
তবে বিতর্ক থামছে না এখানেই। সাংবাদিক পাওলো অ্যারেনাস ও আরেক সাংবাদিক জাকোবো সোলানো সেরচিয়ারো দুজনেই এই কেলেঙ্কারির খবর নিশ্চিত করেছেন। তাদের দাবি, দুরান আচরণগত সমস্যায় জড়িয়েছেন এবং এতে দলের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
আর্জেন্টিনার মতো শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এমন অস্থিরতা কলম্বিয়া দলের প্রস্তুতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে কলম্বিয়া ফুটবল ফেডারেশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি, তবে বিতর্কিত ঘটনাটি নিঃসন্দেহে লাতিন আমেরিকার ফুটবলে এক আলোচিত অধ্যায় হয়ে থাকছে।
কেএন/টিকে