একসময় বলিউডের প্রায় প্রতিটি কোণায় রাজত্ব করছিলেন রনবীর সিং। বড় পর্দা, মঞ্চ, পণ্যের প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া — সর্বত্র ছিল তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। তাঁর অতিরিক্ত প্রাণশক্তি, রঙিন পোশাক এবং উচ্ছ্বাসময় আচরণ তাঁকে বানিয়ে তোলে এক অনন্য তারকা। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে গেলেন তিনি। নেই নতুন কোনো ছবি, নেই আগের মতো চোখে পড়ার মতো বিজ্ঞাপন কিংবা বিতর্ক। রনবীর সিং যেন চুপচাপ সরে দাঁড়ালেন সকল কোলাহল থেকে।
এই চুপ থাকাই এখন বলিউডে আলোচনার বিষয়। অনেকেই বলছেন, এটিই হতে পারে তাঁর সবচেয়ে কৌশলী সিদ্ধান্ত। কারণ রনবীরের অতিরিক্ত দৃশ্যমানতা, তাঁর প্রতিটি দিক থেকে ছড়িয়ে পড়া জাঁকজমক, এক সময় দর্শকদের মনে তৈরি করেছিল একধরনের ক্লান্তি। তাঁর প্রতিভা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না থাকলেও, তিনি যেন নিজেই নিজের উপস্থিতিকে অতিক্রম করে ফেলেছিলেন।
‘সিংঘম এগেইন’ ছবির ব্যর্থতা সেই ক্লান্তির প্রকাশ ঘটায়। বক্স অফিসে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারা এই ছবিটি রনবীরের ‘চেনা রূপ’-এর প্রতি দর্শকের আগ্রহ কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। যেই শক্তি একসময় তাঁকে নজরকাড়া করত, তা-ই তখন দর্শকের কাছে হয়ে ওঠে বেশি কিছু।
এরপর রনবীর সরে যান। বিজ্ঞাপনের চুক্তি কমে যায়, তাঁকে দেখা যায় না ফ্যাশন শো কিংবা পুরস্কার বিতরণীতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত নীরব। আর ঠিক তখনই শুরু হয় নতুন করে কৌতূহল। ‘লুটেরা’, ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’, কিংবা ‘গালি বয়’-এর মতো পুরোনো ছবিগুলো আবার ঘুরে ঘুরে দেখা শুরু করেন ভক্তরা। প্রশ্ন উঠতে থাকে— রনবীর এখন কোথায়?
এই নীরবতাই যেন হয়ে উঠেছে নতুন আকর্ষণ। যা কোনো প্রচারণা নয়, বরং একেবারে মানুষের ভেতর থেকে উঠে আসা অনুসন্ধান। তারকারা অনেক সময় নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন ঠিক তখনই, যখন তাঁরা বুঝতে পারেন — আবার ফিরে আসার জন্য দর্শকের মন খালি করে দিতে হয়।
রনবীর সিং কি তবে পরিকল্পনা করেই সরে দাঁড়িয়েছেন? যদি এই নীরবতার শেষে আসে এমন এক পারফরম্যান্স, যা আবার মনে করিয়ে দেয় তাঁর গভীর অভিনয়ক্ষমতা, তবে সেই ফিরে আসা হতে পারে স্মরণীয়। কারণ একজন সত্যিকারের তারকা শুধু আলোতে নয়, অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েও মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারেন।
কেএন/টিকে