বলিউডে দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এক অদ্ভুত ট্রেন্ড—বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলেও নায়ক থাকেন প্রথমসারিতে, কিন্তু তাঁদের বিপরীতে নায়িকা হন অর্ধেক বয়সের। এই প্রেক্ষাপটে সালমান খানের পরবর্তী ছবিতে চিত্রাঙ্গদা সিংহকে নেওয়ার খবরটা নিঃসন্দেহে আলাদা নজর কাড়ছে।
এখনও ছবির নাম বা বিষয়বস্তু সরকারি ভাবে ঘোষণা না হলেও, ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ছবিটি হতে চলেছে একটি বাস্তব সামরিক ঘটনার অনুপ্রেরণায়। বেশ কিছু প্রতিবেদন বলছে, গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পটভূমিতে নির্মিত এই ছবিতে সালমান খানের চরিত্র হবে একজন সেনাকর্তার। সেই প্রেক্ষাপটে চিত্রাঙ্গদার কাস্টিংকে দেখা হচ্ছে বাস্তবধর্মী এবং পরিণত একটি সিদ্ধান্ত হিসেবে।
চিত্রাঙ্গদা সিংহ, যিনি 'হাজারো খোয়াইশে অ্যায়সি' বা 'ইয়ে সালি জিন্দেগি'-র মতো ছবিতে চরিত্রনির্ভর, আবেগময় অভিনয়ের জন্য পরিচিত, তাঁর বয়স এখন ৪৯। সালমানের বয়স ৫৮। অর্থাৎ এখানে একেবারে যুগপৎ বয়সের দুই অভিনেতাকে একসঙ্গে পর্দায় দেখা যেতে পারে—যা বলিউডে এখনও পর্যন্ত এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
তবে এই কাস্টিং নিয়েই শুরু হয়েছে দ্বিমত। সালমানের বহু ভক্তই চেয়েছিলেন তাঁকে আবারও দেখতে দীপিকা, ক্যাটরিনা বা অন্য কোনও তরুণ তারকার সঙ্গে। বিশেষ করে 'সিকান্দার'-এর মতো প্রজেক্ট ঘোষণার পরে অনেকেই ধরেই নিয়েছিলেন, এর কাস্টিং হবে পুরোদমে গ্ল্যামারঘন ও বাণিজ্যিকভাবে চেনা ফর্মুলার।
কিন্তু নতুন এই ছবির ক্ষেত্রে নির্মাতারা সম্ভবত সেই ফর্মুলা থেকে বেরিয়ে এসে চরিত্র ও আবেগকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন। যদি সত্যিই ছবির প্রেক্ষাপট হয় সেনা, দেশপ্রেম এবং ব্যক্তিগত আত্মত্যাগের ওপর ভিত্তি করে, তবে চিত্রাঙ্গদার মতো অভিনেত্রীকে বেছে নেওয়া একেবারে যৌক্তিক। গ্ল্যামার নয়, বরং বাস্তব অভিব্যক্তি ও অভিনয়ের পরিপক্বতাই তখন মুখ্য হয়ে ওঠে।
এই সিদ্ধান্ত হয়তো মুক্তির প্রথম দিনে ১০০ কোটির বক্স অফিস নিয়ে আসবে না, কিন্তু এটি হতে পারে বলিউডে একটি নীরব বিপ্লব—যেখানে বয়স নয়, চরিত্র ও গল্পকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। দর্শক যদি এই বাস্তবতা গ্রহণ করেন, তাহলে এটি হতে পারে একটি উল্লেখযোগ্য সিনেমা, যা বলিউডে বয়স ও নারী চরিত্রের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।
চিত্রাঙ্গদার কাস্টিংকে তাই ‘সাহসী’ নয়, বরং সময়োপযোগী এবং চরিত্র-ভিত্তিক এক প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত বলেই ধরা যায়। এখন দেখার বিষয়, সালমানের ভক্ত ও মূলধারার দর্শক এই নতুন রসায়নকে কতটা গ্রহণ করেন।
আরআর/টিএ