সংলাপ যেন শুধুই নির্বাচনমুখী ‘সমঝোতার ফাঁদ’ না হয়: হাসনাত

জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে বিএনপি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সংলাপকে ইতিবাচক বললেও, তা যেন শুধুই নির্বাচনমুখী ‘সমঝোতার ফাঁদ’ না হয়ে ওঠে বলে সতর্ক করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেন, “সংলাপের কেন্দ্রে নির্বাচন নয়; থাকা উচিত বিচার, সংস্কার এবং জনগণের স্বপ্নপূরণের রূপরেখা। এই সরকার একটি অভ্যুত্থানের পর গঠিত, সুতরাং তা কেবল ভোটের তারিখ ঘোষণার নয়—অসাম্প্রদায়িক, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি নির্মাণের দায়ও বহন করে।”

শুক্রবার (১৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে হাসনাত আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।

হাসনাত বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে আমরা অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখি। জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সাথে সকল রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও মৌলিক সংস্কার ঠিক ততটা গুরুত্ব পায়নি।”

নির্বাচন আয়োজনই এই সরকারের একমাত্র কর্তব্য নয়। “এই সরকার শুধুমাত্র একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো রূপ নয়। বরং এটি একটি অভ্যুত্থানের উপর দাঁড়িয়ে, দেশের মানুষের অসংখ্য ত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার,”—লেখেন তিনি।

এনসিপি নেতা জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণা’ ও ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই সনদে মৌলিক সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক রূপান্তরের রূপরেখা থাকতে হবে। এসব ছাড়া শুধু ভোটের মাস ঘোষণা করা দায়িত্বচ্যুতির নামান্তর।”

সংস্কার আগে, ভোট পরে—এটাই হওয়া উচিত রোডম্যাপ, মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, “সনদ রচনার পরেই নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত। দেশের স্থানীয় পর্যায়ে ইতোমধ্যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা, পেশিশক্তির প্রদর্শন—এসব ঘটছে প্রতিনিয়ত। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা। যা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত।”

তার ভাষ্য, “নির্বাচনের মাস এপ্রিল হোক বা ফেব্রুয়ারি—তা মুখ্য নয়। মুখ্য বিষয় হলো, এর আগে আমরা ‘জুলাই সনদ’, দৃশ্যমান বিচার এবং কাঠামোগত সংস্কারের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি কি না।”

হাসনাতের মতে, জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সরকারকে এই মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে সংলাপের পাশাপাশি, বিচার, গণহত্যার দায়মুক্তির অবসান এবং প্রশাসনিক সংস্কারের অঙ্গীকার সামনে আনতে হবে।

আরএম


Share this news on:

সর্বশেষ

img
কখনোই দিনে ২০ ঘণ্টা কাজ করিনি : কাজল Jun 15, 2025
img
বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ বাঁচবে : খৈয়াম Jun 15, 2025
img
ক্লাব বিশ্বকাপে মেসির ইন্টার মায়ামির গোলশূন্য সূচনা Jun 15, 2025
img
ঈদের ছুটি শেষে শেয়ার বাজার খুলছে আজ Jun 15, 2025
img
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা, তবুও তাপমাত্রা বাড়তে পারে Jun 15, 2025
img
১০ দিনের ঈদের ছুটি শেষে অফিস-আদালত খুলছে আজ Jun 15, 2025
img
কুবেরা মুক্তির আগে তেলেগু ইন্ডাস্ট্রিকে সতর্ক করলেন নাগার্জুনা Jun 15, 2025
img
সীতাকুণ্ডে ঝরনায় ডুবে প্রাণ গেল ১ জনের Jun 15, 2025
img
গত ১৭ বছর মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছিলেন স্বৈরাচারী সরকার : শারমিন পুতুল Jun 15, 2025
img
ইরানের হামলায় নেতানিয়াহুর দেশে নিহত বেড়ে ছয়, আহত প্রায় ৫০ Jun 15, 2025
img
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে ৩ Jun 15, 2025
img
এবার ইসরায়েলে হামলা করল ইয়েমেন Jun 15, 2025
img
পটুয়াখালীতে দুই বাসের মাঝে আটকে প্রাণ গেল তরুণীর Jun 15, 2025
img
আবারও মিসাইল নিক্ষেপ করল ইরান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে সতর্কতা সাইরেন Jun 15, 2025
img
পাঠান-টাইগারের পর আসছে 'ওয়ার টু', একসঙ্গে দেখা যাবে হৃতিক-এনটিআর-আলিয়াকে Jun 15, 2025
img
খামেনিকে হত্যার চেষ্টা চালাতে পারে ইসরায়েল Jun 15, 2025
img
'টানা ২০ ঘণ্টা কাজ করিনি'— দীপিকার সমর্থনে মুখ খুললেন কাজল Jun 15, 2025
img
তারেক রহমান ত্যাগী কর্মীদের পাশে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন : মুন্না Jun 15, 2025
img
১৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সিরিয়ার আকাশসীমা Jun 15, 2025
img
ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তরে হামলা করল ইসরায়েল Jun 15, 2025