কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে মিলল চালকের অবহেলার প্রমাণ

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে দুর্ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এতে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং গেটকিপারের অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। তবে তদন্তে গার্ডের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এর আগে, ৫ জুন দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়েমুচড়ে যায়। এ ঘটনায় দুই বছরের শিশুসহ দুজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পরদিন ৬ জুন চট্টগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে।

কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন- বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) সাজিদ হাসান, বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ আবু রাফি মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হোসেন ও বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। তবে ঈদের ছুটিসহ নানা কারণে বিলম্বে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই প্রাথমিকভাবে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক (লোকোমাস্টার) গোলাম রসুল, সহকারী চালক আমিন উল্লাহ, গার্ড সোহেল রানা এবং অস্থায়ী গেটকিপার (টিএলআর) মাহবুবকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্ত কার্যক্রমে তাদেরসহ সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গত ১৬ জুন ট্রেনচালক গোলাম রসুল ও সহকারী চালক আমিন উল্লাহ তাদের বক্তব্যে জানান, সেদিন ট্রেনের গতি বেশি ছিল এবং সেতুতে ওঠার সময় তারা সিগন্যাল দেখতে পাননি। তবে, তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাদের কাছে জানতে চান, কেন রেলের নিয়ম অনুযায়ী সেতুর আগে ট্রেন থামানো হয়নি। তারা সন্তোষজনক উত্তর দিতে ব্যর্থ হন।

তদন্ত কমিটি আরও জানায়, সিগন্যাল অমান্য করার অভিযোগে বিশেষভাবে তদন্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন গোমদন্ডী স্টেশন আসার সময় সিগন্যাল পরীক্ষা করেন। কিন্তু চালকদের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

কমিটির সদস্যরা বলেছেন, কালুরঘাট রেল সেতু একটি ডেডস্পট। নিয়মানুযায়ী সেতুর ওপর ওঠার আগে ট্রেন থামাতে হয়। চৌকিদার থেকে স্লিপ নিয়ে ১০ কিলোমিটার গতিতে পুনরায় ট্রেন চালাতে হয়। কিন্তু চালক ঘটনার দিন এই নিয়ম মানেননি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) প্রতিবেদন পেয়েছি। এটি আমরা পর্যালোচনা করে দেখব। এরপর দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেব।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তেল আবিব শহরে নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে বিস্ফোরণ Jun 20, 2025
img
ভারতে কারাভোগ শেষে স্বদেশে ফিরলেন ১৪ বাংলাদেশি নাগরিক Jun 20, 2025
img
খামেনির পতন হলে কে আসবে তার জায়গায়? Jun 20, 2025
img
তেলেগু সিনেমায় ঝড় তুললেন অভিনেত্রী মালভিকা, ভাইরাল 'দ্য রাজা সাব' টিজার Jun 20, 2025
img
চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্রসহ ছাত্রদল নেতা গ্রেফতার Jun 20, 2025
img
আমেরিকার সাথে লড়াইয়ের জন্য শক্তি বাঁচিয়ে রাখছে ইরান! Jun 20, 2025
img
সম্পত্তির জন্যই অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে ভেঙেছিল অভিনেত্রী কারিশমার? Jun 20, 2025
img
ক্যাটাগরি-৩ মাত্রায় রূপ নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’ Jun 20, 2025
img
‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য ফিরছে মূল নকশায় Jun 20, 2025
img
ফুলের তোড়া দিয়ে প্রাক্তন স্বামীকে বিদায় জানালেন অভিনেত্রী কারিশমা Jun 20, 2025
img
ইরানের একাধিক ওয়ারহেডযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্রে হতভম্ব ইসরায়েল Jun 20, 2025
img
বিএনপি সততার দিক দিয়ে এক নম্বর : আব্দুস সালাম Jun 20, 2025
img
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের সম্মানিত মানুষদের আনন্দিত করেছে : খামেনি Jun 20, 2025
img
ইরানে সরকার পতন ‘আমাদের আনুষ্ঠানিক লক্ষ্য নয়’: নেতানিয়াহু Jun 20, 2025
img
থাই প্রধানমন্ত্রীর গোপন ফোনালাপ ফাঁস, জোটসঙ্গীর পদত্যাগ Jun 20, 2025
img
ইরানে ফের সরকার পতনের ছক Jun 20, 2025
img
ইসরায়েলের চ্যানেল ১৪ অফিস খালি করতে বলল ইরান Jun 20, 2025
img
একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লো উত্তর কোরিয়া, প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক Jun 20, 2025
img
এবার ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিল হিজবুল্লাহ Jun 20, 2025
img
রোহিঙ্গা সমস্যার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী বাংলাদেশ: তারেক রহমান Jun 20, 2025