বর্তমানে ক্যারিয়ারের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন বলিউড অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান। এক সময় যাঁকে “পরবর্তী গোবিন্দ” বলে অভিহিত করা হতো, আজ তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ ছবি, দর্শকের সাড়া না পাওয়া এবং ওটিটি যুগের নতুন তারকাদের উত্থানের মুখে পড়ে এখন নিজের অবস্থান ধরে রাখাই হয়ে উঠেছে চ্যালেঞ্জ।
২০১২ থেকে ২০১৭—এই সময়টাই ছিল বরুণ ধাওয়ানের জন্য সোনালী অধ্যায়। ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ দিয়ে দুর্দান্ত সূচনা, এরপর ‘ম্যায় তেরা হিরো’, ‘বাদলাপুর’, ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’, ‘এবিসিডি ২’, ‘বদ্রিনাথ কি দুলহানিয়া’ একের পর এক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন। ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জুড়ুয়া ২’ ছিল তাঁর শেষ বড়সড় একক ব্লকবাস্টার।
কিন্তু এরপর থেকেই শুরু হয় পতনের অধ্যায়। ২০১৮ সাল থেকে একের পর এক ছবি হয়ে যায় বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়া প্রকল্প। ‘অক্টোবর’ সমালোচকদের প্রশংসা পেলেও বাণিজ্যিকভাবে ছিল দুর্বল। ‘কলঙ্ক’, ‘স্ট্রিট ডান্সার থ্রি-ডি’, ‘কুলি নম্বর ১’ (ওটিটি), ‘ভেড়িয়া’ কিংবা সদ্য আলোচিত ‘বেবি জন’—সব মিলিয়েই ফলাফল হয়েছে মিশ্র বা নেতিবাচক।
‘সুই ধাগা’ ও ‘জুগ জুগ জিও’-এর মতো কিছু ছবি কিছুটা সফলতা পেলেও তা ছিল বড় তারকাসমৃদ্ধ যৌথ প্রজেক্ট, একক হিরো হিসেবে নয়। ফলে তাঁর বাণিজ্যিক আকর্ষণ নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলছেন সমালোচক ও ভক্তরাও।
এই পরিস্থিতিতে দুইটি ছবি হতে পারে বরুণ ধাওয়ানের জন্য মোড় ঘোরানোর চাবিকাঠি। প্রথমটি, ‘সানি সংস্কারী কি তুলসী কুমারী’—যেখানে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন জাহ্নবী কাপুর, প্রযোজনায় করণ জোহর। এটি একটি রোমান্টিক কমেডি, যেটির মাধ্যমে পুরনো ‘ধাওয়ান-ব্র্যান্ড’ মেজাজ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে।
দ্বিতীয়টি, তাঁর বাবা ডেভিড ধাওয়ানের পরিচালনায় একটি নামহীন প্রজেক্ট। এর মাধ্যমে বরুণ ও ডেভিড ধাওয়ানের পুরনো ম্যাজিক ‘ম্যায় তেরা হিরো’ কিংবা ‘জুড়ুয়া ২’-এর মতো ছবির ধারা আবার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন ভক্তরা।
তবে এই দুটি ছবিও যদি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়, তাহলে বরুণ ধাওয়ানের ‘একক নায়ক’ পরিচয় স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা।
বর্তমানে ৪০-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এই তারকার জন্য এটি শুধুমাত্র বাঁচা-মরার লড়াই নয়, বরং প্রজন্মগত প্রতিযোগিতার মধ্যেও নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার শেষ সুযোগ। না হলে, নতুন তারকাদের ভিড়ে তিনি এক সময়ের নস্টালজিয়া হয়ে উঠবেন কেবল।
এসএম/টিকে