'ইন্ডিয়ান ২' সিনেমাটি নিয়ে যেমন উচ্চাশা ছিল, বাস্তবে তার ফলাফল ছিল ঠিক উল্টো। সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শক ও সমালোচক— উভয় পক্ষেরই প্রবল রোষে পড়ে। কেউ বলছে এটি ভাঙা গল্পের এক অসম্পূর্ণ খণ্ড, কেউ বলছে এটি ছিল এক বিশাল ব্যর্থতা। এর ফলে অনেকে ধরে নিয়েছিল, এই ব্যর্থতার ধাক্কায় হয়তো বন্ধই হয়ে যাবে ‘ইন্ডিয়ান ৩’। তবে চলচ্চিত্র মহলে এখন নতুন গুঞ্জন— নির্মাতা ও প্রযোজকেরা পিছিয়ে যাননি, বরং পরবর্তী কিস্তির প্রস্তুতি চলছে দ্রুত গতিতেই।
খবরে প্রকাশ, ‘ইন্ডিয়ান ৩’ সিনেমার কিছু অংশ আগেই শুটিং হয়ে গেছে, আর বাকি অংশ খুব শিগগিরই ক্যামেরাবন্দি হবে। নির্মাতা শংকরের মতে, পুরো কাহিনির শেষটুকু বলা জরুরি, আর তাই থেমে থাকা নয়, এগিয়ে যাওয়া। বিশাল বাজেটের এই সিরিজের প্রযোজকেরাও চাইছেন পূর্ববর্তী বিনিয়োগ থেকে কিছুটা হলেও অর্থ উদ্ধার করতে।
‘ইন্ডিয়ান ২’ মূলত একটি গল্পকে কেটে দুই ভাগে ভাগ করায় দর্শকদের কাছে হয়েছে বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ। অনেকেই বলছেন, সিনেমাটি যেন হঠাৎ শেষ হয়ে গেল— গতি, আবেগ কিংবা গভীরতা কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। এতে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের বন্যা, ট্রোলের ঢেউ।
তবে কেনো এতকিছুর পরেও এগোচ্ছে ‘ইন্ডিয়ান ৩’? কারণ স্পষ্ট—প্রধান চরিত্র সেনাপতি, অর্থাৎ কামাল হাসানের জনপ্রিয়তা এখনও এক ধরনের নস্টালজিয়া তৈরি করে। পরিচালক শংকর দৃশ্যত চাইছেন, গল্পের যবনিকা টানতে। আবার যেহেতু কিছুটা শুটিং হয়ে গেছে এবং সেট নির্মাণসহ নানা পর্যায়ে প্রচুর খরচ হয়ে গেছে, প্রযোজকেরাও একে বাতিল না করে রিলিজ পর্যন্ত এগিয়ে যেতে চান।
তবুও ট্রেড অ্যানালিস্টদের সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তাঁদের মতে, ‘ইন্ডিয়ান ৩’ যদি চমক সৃষ্টি না করতে পারে, তাহলে এটি হবে আরেকটি মহাবিপর্যয়। দর্শকেরাও আর আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাঁদের মতে, “দুইটা বিপর্যয় হয়ে গেছে, তৃতীয়টি শুধুই শেষ পেরেক।”
কামাল হাসানের ঘনিষ্ঠ অনেকে পর্যন্ত বলছেন, এমন একসময় সিরিজটিকে নতুনভাবে ভাবা উচিত। শুধু পরিণতির খাতিরে সিনেমা বানানো হলে তা হয়তো কোনো অর্থ বহন করবে না।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, যদি সত্যি ‘ইন্ডিয়ান ৩’ আগামী বছরের ডিসেম্বর মাসে মুক্তি পায়, তাহলে তা বাঁচাতে প্রয়োজন হবে এক অলৌকিক প্রচার কৌশল, অথবা সিনেমার কাহিনীতেই থাকতে হবে এমন কোনো বিস্ময়, যা আবারও আগের মতো দর্শকদের হলে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
কেএন/টিকে