ময়মনসিংহের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে নানা অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় দুদক কর্মকর্তাদের কাছে হয়রানির অভিযোগ করেন উপস্থিত সেবাপ্রার্থীরা।
সোমবার (২৩ জুন) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ নগরীর কাচারি ঘাটস্থ জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে দিনভর চলে এই অভিযান।
অভিযানে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই দুদক টিমের নেতৃত্ব দেন দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বুলু মিয়া। অভিযানকালে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কক্ষে দুদকের সামনে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন উপস্থিত সেবাপ্রার্থীরা। এ নিয়ে দুদক কর্মকর্তাদের সামনেই সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক টিম।
এ সময় মো. সানি নামে এক সেবাপ্রার্থী বলেন, আমার বড় ভাই ভোটার হবেন তাই সব কাগজপত্র জমা দেওয়া। আজ সকাল ১০টায় নির্বাচন অফিসে আসার কথা ছিল কিন্তু ঢাকা থেকে আসতে এক ঘণ্টা দেরি হওয়ায় তারা শুনানি না করেই আবার নতুন করে তারিখ দিয়েছে। এই ভোগান্তি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
লাবনী আক্তার বীথী নামে আরেক সেবাপ্রার্থী বলেন, আমার নানির আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য ছয় মাস ধরে ঘুরছি। কিন্তু তারিখ অনুযায়ী নির্বাচন অফিসে আসলে তথ্য ঘাটতি রয়েছে বলে বার বার নতুন তারিখ দেয়। সেই অনুযায়ী কাগজপত্র জমা দিলেও সংশোধন হবে কি না তা বুঝতে পারছি না।
একই ধরনের অভিযোগ উপস্থিত সেবাপ্রার্থী আরও অনেকেরই। তারা জানান, এই অফিসের বড় কর্মকর্তার ব্যবহার খুব খারাপ। কোনো কথা বুঝিয়ে না বলেই কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দেন। তিনি প্রায় সময়ই সেবাপ্রার্থীদের গালিগালাজ করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তবে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করি শতভাগ সেবা নিশ্চিতের জন্য। তারপরেও যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে সেটা আমার অজান্তে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দুদকের সমন্বিত বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলু মিয়া বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। সরকারি দপ্তরে এসে মানুষের এত হয়রানি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগগুলো আমরা কমিশনে পাঠাব। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরআর/টিকে