ভারতীয় গল্পে দক্ষিণ এগিয়ে, বলিউড পিছিয়ে : বললেন পবন

দক্ষিণী চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা ও রাজনৈতিক নেতা পবন কল্যাণ সম্প্রতি হিন্দি চলচ্চিত্রশিল্পের অবক্ষয় নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি বলিউডের উদাসীনতা, পশ্চিমা অনুকরণের প্রবণতা ও অমূল্য জাতীয় চেতনাকে বাদ দিয়ে নিছক বাণিজ্যিকতার পেছনে ছোট, এইসব অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

গণমাধ্যমে খোলামেলা সাক্ষাৎকারে পবন কল্যাণ বলেন, ‘‘হিন্দি সিনেমা আজ আর নিজের শিকড়ে নেই। ভাঁড়ামো আর পাশ্চাত্য ধাঁচে মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, যেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’

তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, বলিউডের বহু পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে হিন্দি চলচ্চিত্র তার স্বাভাবিক গতিপথ হারিয়েছে। সেইসঙ্গে জানান, বিশ্বায়নের অতিমাত্রিক ছাপ পড়েছে হিন্দি সিনেমার ওপর, যা সিনেমাগুলিকে দেশীয়তার বদলে এক ধরনের বিদেশি অনুকরণে পরিণত করেছে।

পবনের ভাষ্য, ‘‘তিলকধারী কিংবা সংস্কৃতিমনা চরিত্রদের নিয়ে এমনভাবে ব্যঙ্গ করা হয়েছে, যেন তা হাস্যরসের বিষয়। এটি আমাদের মূল বিশ্বাস ও ঐতিহ্যকে ছোট করার সামিল।’’








তিনি তুলনা টেনে বলেন, দক্ষিণী চলচ্চিত্র, বিশেষত তেলুগু, তামিল ও কন্নড় ভাষার সিনেমাগুলো এখনো ভারতের সাংস্কৃতিক শিকড় আঁকড়ে ধরেই সামনে এগিয়ে চলেছে। দক্ষিণের নির্মাতারা গল্পের মাধ্যমে ভারতীয় সমাজ, গ্রামীণ জীবন, আত্মিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক বন্ধনকে তুলে ধরছেন।

এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, হিন্দি ভাষায় তৈরি ‘দঙ্গল’ ছিল একমাত্র ছবি যা সত্যিকারের ভারতীয়তার প্রতিনিধিত্ব করেছিল। আর অন্যদিকে ‘পুষ্পা’, ‘কান্তারা’ ও ‘সালার’-এর মতো দক্ষিণী চলচ্চিত্রগুলো সারা দেশে সাড়া ফেলেছে, কারণ এগুলো শুধু বাণিজ্য নয়, বরং ভারতীয় গল্প বলার ধারায় এক বিপ্লব।

নিজের আগত সিনেমা নিয়েও আশাবাদী পবন কল্যাণ। 'হরি হরা বীর মাল্লু', 'দে কল হিম ওজি' ও 'উস্তাদ ভাগৎ সিং'-এর মতো ছবি তৈরির মধ্য দিয়ে তিনি দর্শকদের দেখাতে চাইছেন যে বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করেও ভারতীয়তা ধরে রাখা সম্ভব।

তার বক্তব্য, মুম্বাই চলচ্চিত্র জগত শুনুক বা না শুনুক, দক্ষিণ ভারতে ইতোমধ্যে এক গল্প বলার বিপ্লব শুরু হয়েছে। যার ভিত্তি দেশীয়তা, শিকড়ের টান ও সংস্কৃতির প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধা।

এসএম/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জনগণকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভুয়া সতর্কবার্তা দিল ইসরায়েল Jun 26, 2025
img
এনসিসির নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দিল ঐকমত্য কমিশন Jun 26, 2025
img
উপদেষ্টা আসিফকে ক্ষমা চাইতে হবে: ইশরাক Jun 26, 2025
img
কণ্ঠশিল্পী কনার বিচ্ছেদ, খোঁচা দিলেন ন্যান্সি Jun 26, 2025
img
বিমানবন্দর রেলস্টেশনে সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৭ Jun 26, 2025
img
ঝিনাইদহ সীমান্তে ১৩ জনকে আটক করল বিজিবি Jun 26, 2025
img
কলম্বোতে ডাক মেরে ইতিহাস গড়লেন এনামুল Jun 26, 2025
img
বরিশালে বিপিএল হলে দ্বিগুণ লাভ হবে ক্রিকেট বোর্ডের: মিজানুর রহমান Jun 26, 2025
জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াত আমির Jun 26, 2025
‘আমার ছবিতে জুতা মারা, ১ কোটি নগরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে?’ Jun 26, 2025
যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করায় ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন Jun 26, 2025
img
'যুদ্ধে ইরান ঐশ্বরিক বিজয় পেয়েছে’ Jun 26, 2025
img
৫ আগস্টের পর কারখানা বন্ধের পেছনে বর্তমান সরকার দায়ী নয়: ড. সাখাওয়াত Jun 26, 2025
img
বিরোধী মত সহ্য করতে না পারা সরকার অগণতান্ত্রিক-জালিম সরকার: গোলাম পরওয়ার Jun 26, 2025
img
নাবিকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিতে সরকার বদ্ধপরিকর: আসিফ নজরুল Jun 26, 2025
img
বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে কণ্ঠশিল্পী কনা জানালেন ‘সবই আল্লাহর ইচ্ছা’ Jun 26, 2025
img
৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে পরিপত্র জারি Jun 26, 2025
img
অবশেষে ফিরছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান সিজন ৩’, ফার্স্ট লুকেই চমক! Jun 26, 2025
img
‘জাইমা রহমানের পাশে আছি’, জানালেন নীলা ইসরাফিল Jun 25, 2025
img
‘৬ মাস পর পর ফেডারেশনের মাধ্যমে বাছাইকৃত প্রশিক্ষণার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে’ Jun 25, 2025