নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান যতটা বদলাবে ধারণা করা হয়েছিল, আদতে তেমন কিছুই হয়নি। এছাড়া মব কালচার ও রাজনৈতিক মতানৈক্যও স্পষ্ট হচ্ছে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি চ্যানেলের টকশোতে হাজির হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘সাধারণ মানুষ গরিব মানুষ যারা স্বপ্ন দেখেছিল শেখ হাসিনা যাওয়ার পর তাদের লাইফটা একটু ইজিয়ার হবে।
তুলনামূলকভাবে দ্রব্যমূল্য এখন অন্তত ইনফ্লেশনটা বাড়ছে না। ইনফ্লেশন (মুদ্রাস্ফীতি) ইজ ভেরি হাই। কিন্তু এখনো বাড়ছে না আগের মতো করে। কিন্তু তার তো উপার্জন কমে যাচ্ছে।
কারণ দেশের অর্থনীতিটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অনেক কম। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলছে এটা তিন পারসেন্টের আশপাশে হবে। ফলে যেটা হয়েছে- মানুষ কাজ হারাচ্ছে, চাকরি হারাচ্ছে।
দাম যেমনই থাকুক তার তো ক্রয়ক্ষমতা কমে গেল। এদিকে ব্যবসায়ীরা দেখছেন অর্থনীতির অবস্থা ভালো না। খুব স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের একটা সরকারের মধ্যে এটা হয় না।’
মব নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাও সরকারের বড় ব্যর্থতা উল্লেখ করে জাহেদুর বলেন, ‘মব নিয়ন্ত্রণ করতে পারা। যেমন আরো আরো যদি স্পেসিফিক করি, ইসলামের নামে যে মবগুলো তৈরি হয়েছে এগুলোর তো খালি দেশের ক্ষতি হয়েছে তা না।
দেশের ইমেজও বাইরে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। প্লাস আমরা ইন্ডিয়ার হাতে একটা অস্ত্র তুলে দিয়েছি। ইন্ডিয়া কিন্তু একটা ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। ড. ইউনূস আদতে জঙ্গিবাদের উত্থান এবং জঙ্গিবাদীদের একটা আপ্রাইজিং এর কারণে ক্ষমতায় এসেছেন। এই ইসলাম নামধারী এগুলো আসলে ইসলাম না। এই যে মব, মাজার ভাঙা, মেয়েদের ফুটবল খেলা হতে দেব না ,তারপরে নাটক হতে দেব না, বাউল গান হতে দেব না, অভিনেত্রীরা শোরুম উদ্বোধন করতে পারবে না, এগুলো যখন সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই। বহির্বিশ্বে বিশেষ করে নিউইয়র্ক টাইমস কিন্তু এটা নিয়ে রিপোর্ট করেছে। এই হচ্ছে মোটামুটি পরিস্থিতি।’
এনসিপির প্রসঙ্গে জাহেদ উর রহমান বলেন, “নতুন দল এনসিপি। এনসিপি তো যথেষ্টই হতাশা দেখাচ্ছেন যে, তাদের মৌলিক সংস্কার যদি না হয় তারা এমনকি জুলাই চার্টারও সাইন করবেন না। সুতরাং তারা জুলাই আমরা যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি তারা সন্তুষ্ট নন। খুব স্বাভাবিকভাবেই। কেউ কেউ বলছে এটা বিপ্লব হয় নাই, এটা গণ-অভ্যুত্থান। কিন্তু পাঁচ বছর এই সরকারটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় কিনা চেষ্টা করি। সরকারের একটা অংশ সরকারের প্রেস সচিবকে দেখেছি, পাঁচ বছর এ সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে চায় এমন কেউ কোথাও আওয়াজ তুললেই সেটা উনি শেয়ার করেন। অন্যদিকে কোনো কোনো উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, ‘আমরা নির্বাচিত না কে বলল?’ ফলে এটা খুবই খুবই ডাইভার্স।”
এফপি/এসএন