বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করতে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে টেকনিক্যাল জ্ঞান সমৃদ্ধ জনশক্তি গড়ে তুলতে চাই। এজন্য কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো কার্যকর করে গড়ে তুলতে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।’
তিনি বলেন, সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ৪৯৩ উপজেলায় টেকনিকাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের কাজ পর্যায়ক্রমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানান, বিভিন্ন জেলায় এরই মধ্যে ৮৫টি স্কুল তাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে। বাকিগুলোর জন্য দ্রুত জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে ভবন নির্মাণসহ শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগে থেকে ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম চলছিল।
পরে আরো ৩২৯টির জমি অধিগ্রহণসহ সার্বিক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি কারিগরি অধিদপ্তর সেভাবেই তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিবে যাবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশে এবং বিদেশে শ্রমবাজারে চাকরির সুযোগ বাড়াতে যুব সমাজকে টেকনিক্যাল শিক্ষায় শিক্ষিত করার বিকল্প নেই।
জানতে চাইলে কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব কেএম কবিরুল ইসলাম জানান, সারা দেশে প্রাথমিকভাবে বাস্তবায়নাধীন ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মধ্যে ৭৫টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
১৫টির কাজ শেষ হয়েছে এবং অবশিষ্টগুলোর কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজগুলো কারিগরি শিক্ষায় যুক্ত হচ্ছে।
সচিব জানান, প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুলের জন্য তিন একর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে এবং সেখানে মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া শিক্ষকদের জন্য ডরমেটরি, প্রিন্সিপালের আবাসিক ভবন এবং একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ভবন তৈরি করা হবে। ছাত্রদের জন্য কোনো হোস্টেল নির্মাণের বরাদ্দ না থাকলেও আগামীতে ছাত্র হোস্টেল নির্মাণের বিষয়ে সরকার আন্তরিক।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) শোয়াইব আহমাদ খান বলেন, প্রতিটি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রায় ৮৪০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রি ভোকেশনাল এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কমপক্ষে চারটি করে ট্রেডে পড়াশোনা করানো হবে। এছাড়া এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং এইচএসসি (ভোকেশনাল) কোর্সসহ বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
টিকে/