বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের জন্য দিল্লি হাইকোর্টের রায় এক বড় আইনি ধাক্কা হয়ে এসেছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অভিযোগ বাতিলের জন্য করা তাঁর আবেদন আদালত খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে এখন তাঁকে সহ-অভিযুক্ত হিসেবেই ট্রায়াল কোর্টে মামলার মুখোমুখি হতে হবে।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি অনীশ দয়াল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, মামলার শুনানি চলবে ট্রায়াল কোর্টেই। শুধু তাই নয়, জ্যাকলিনের তরফ থেকে ইডি-র দ্বিতীয় সম্পূরক চার্জশিট চ্যালেঞ্জ করেও কোনও স্বস্তি মেলেনি।
মামলাটির কেন্দ্রে রয়েছেন কুখ্যাত প্রতারক সুখেশ চন্দ্রশেখর। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি রিলিগেয়ারের প্রাক্তন প্রোমোটার শিবিন্দর মোহন সিং-এর স্ত্রী অদিতি সিং-এর কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। এই প্রতারণার টাকাতেই বিলাসবহুল উপহার, গাড়ি ও মূল্যবান সামগ্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
ইডি দাবি করছে, এই উপহারগুলো পাওয়ার মাধ্যমে জ্যাকলিন ওই অপরাধমূলক অর্থের সুবিধাভোগী হয়েছেন। অন্যদিকে, জ্যাকলিনের যুক্তি—তিনি প্রতারণার শিকার, কোনো সহায়তাকারী নন। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধে সহায়তার সরাসরি প্রমাণ নেই বলেও তিনি দাবি করেন। তিনি আরও জানান, মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় কোনো অপরাধমূলক অর্থ বা সম্পদ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নেননি।
ইডি-র আইনজীবীর মতে, দিল্লি পুলিশের ইকোনমিক অফেন্সেস উইং মামলায় সাক্ষী থাকলেও এই মানি লন্ডারিং মামলায় তাঁর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। ইডি বলছে, প্রাপ্ত উপহারগুলোই প্রমাণ করে যে জ্যাকলিন এই আর্থিক অপরাধ থেকে উপকৃত হয়েছেন।
২০২২ সাল থেকে জ্যাকলিন ২ লাখ টাকার বন্ডে জামিনে রয়েছেন। তবে হাইকোর্টের রায়ের পর এই মামলার শুনানি এখন আরও দ্রুত গতিতে চলবে ট্রায়াল কোর্টে।
এই মামলা বলিউডের গ্ল্যামার দুনিয়ার আলো-আড়ালকে আরও একবার সামনে এনেছে। স্পষ্ট হয়ে গেছে, তারকা খ্যাতি থাকলেই আইনের চোখে ছাড় পাওয়া যায় না। ভারতের অন্যতম আলোচিত এই আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের পরবর্তী আইনি লড়াই এবার সবার নজরে।
আরআর/টিএ