বিশ্ব ফুটবলে আরেকটি স্মরণীয় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল। সাবেক বার্সেলোনা ও ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচ আনুষ্ঠানিকভাবে ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সে নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষ টানলেন এই মধ্যমাঠের দক্ষ সৈনিক।
নিজের শেষ সময়টা তিনি কাটিয়েছেন সৌদি প্রো লিগ এবং ক্রোয়েশিয়ার হাইডুক স্প্লিট ক্লাবে। এরপরই জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা রাখতে সিদ্ধান্ত নেন। এক আবেগঘন বার্তায় রাকিতিচ বলেন,
"ফুটবল, তুমি আমাকে কল্পনার চেয়েও বেশি কিছু দিয়েছো। জয়, পরাজয়, শিক্ষা, আর আজীবনের বন্ধু। তুমি আমাকে এক অনন্য পথ ও হাজারো গল্প দিয়েছো। তুমি আমাকে এক সুন্দর পরিবার উপহার দিয়েছো এবং এমন সব মুহূর্ত, যা আমি আজীবন হৃদয়ে লালন করবো।"
তিনি আরও বলেন,
"এখন সময় এসেছে তোমাকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে উপভোগ করার- গ্যালারি থেকে, অফিস থেকে কিংবা ঘর থেকে, যেখানে জীবন আমাকে নিয়ে যাবে।"
২০১৪ সালে সেভিয়া থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন রাকিতিচ। আর প্রথম মৌসুমেই হয়ে যান ক্লাবের ইতিহাসের অংশ। লুইস এনরিকে-র অধীনে বার্সেলোনার ঐতিহাসিক ট্রেবল জয়ের (লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়নস লিগ) অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালের বার্লিন ফাইনালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম গোলটিও করেছিলেন তিনিই।
ছয় মৌসুমে বার্সেলোনার জার্সিতে ৩১০টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছেন রাকিতিচ, গোল করেছেন ৩৬টি। তার ঝুলিতে রয়েছে ৪টি লা লিগা, ৪টি কোপা দেল রে, ১টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ১টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ, ১টি উয়েফা সুপার কাপ ও ২টি স্প্যানিশ সুপার কাপ।
পরিসংখ্যানের বাইরে রাকিতিচের খেলা সবসময় প্রশংসিত হয়েছে তার কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা, পরিশ্রমের মানসিকতা এবং মেসি, ইনিয়েস্তা, বুসকেটস ও সুয়ারেজদের সঙ্গে দুর্দান্ত বোঝাপড়ার জন্য।
২০০৪ সালে সুইজারল্যান্ডের নর্ডস্টার্ন বাসেল থেকে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেন রাকিতিচ। এরপর খেলেছেন বাসেল, শালকে ০৪, সেভিয়া এবং বার্সেলোনায়।
একজন চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় হিসেবে রাকিতিচের নাম ইতিহাসে থেকে যাবে তাঁর পরিশ্রম, দক্ষতা ও বিশ্বমানের পারফরম্যান্সের জন্য। এখন দেখার পালা, মাঠের বাইরে ফুটবলকে তিনি কীভাবে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখেন।
টিকে/