পাওয়ান কল্যাণ অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত ঐতিহাসিক অ্যাকশন-ড্রামা 'হরি হরা বীর মাল্লু' (এইচএইচভিএম) মুক্তির আগেই তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ ভারতের মুদিরাজ সম্প্রদায়ের একাংশ দাবি করেছেন, এই ছবিতে তাদের শ্রদ্ধেয় লোকনায়ক পাণ্ডুগা সায়ান্না-র চরিত্রকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ছবিটি ২৪ জুলাই মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও, তার আগেই তেলেঙ্গানা এবং প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে। মুদিরাজ সমাজের নেতারা দাবি করছেন, সিনেমার মুখ্য চরিত্র ‘বীর মাল্লু’, যিনি একজন বিপ্লবী ডাকাত হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছেন, তিনি আদতে তাদের সমাজের ইতিহাস ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক পাণ্ডুগা সায়ান্না-র অনুকরণ।
পাণ্ডুগা সায়ান্না ছিলেন উনিশ শতকে তেলেঙ্গানার এক জননেতা, যিনি জমিদারদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতেন এবং দরিদ্র ও নিপীড়িত জনগণের পক্ষে দাঁড়াতেন। তাকে অনেকেই "দক্ষিণ ভারতের রবিন হুড" বলেও অভিহিত করে থাকেন। কিন্তু 'হরি হরা বীর মাল্লু' সিনেমায় তাকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চিত্রিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
মুদিরাজ সম্প্রদায়ের অভিযোগ, পরিচালক রাধাকৃষ্ণ জাগারলামুড়ি (কৃষ) এবং জ্যোতি কৃষ্ণের পরিচালনায় নির্মিত এই ছবির নির্মাতা সংস্থা মেগা সূর্য প্রোডাকশনস, সরাসরি পাণ্ডুগা সায়ান্না-র নাম ব্যবহার না করেও তার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।
তারা আরও দাবি করছেন, ছবির চিত্রনাট্যে এমন কিছু "মিথ্যা ও সম্পর্কহীন" ঘটনা জুড়ে দেওয়া হয়েছে যা মূল ঐতিহাসিক ঘটনাবলির বিকৃতি ঘটাচ্ছে এবং সমাজের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করছে।
এই প্রসঙ্গে মুদিরাজ সমাজের নেতারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যদি নির্মাতারা প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান কিংবা ছবির চরিত্র ও ইতিহাস সংক্রান্ত সংশোধনী না আনেন, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে ছবির মুক্তি ঠেকানো হবে।
উল্লেখ্য, এই সিনেমাটি পাওয়ান কল্যাণের রাজনৈতিক জীবনের নতুন অধ্যায়ে তার প্রথম বড় পর্দার কাজ, যা স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব বহন করছে। বর্তমানে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী।
ছবিতে ঔরঙ্গজেবের চরিত্রে রয়েছেন বলিউড অভিনেতা ববি দেওল। কেন্দ্রীয় চরিত্র বীর মাল্লু-কে উপস্থাপন করা হয়েছে এক কিংবদন্তী ডাকাত হিসেবে, যিনি নিজাম শাসনের বিরুদ্ধে এবং মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে ঐতিহাসিক কোহিনূর হীরকখণ্ড। এছাড়াও অভিনয়ে রয়েছেন নিধি আগরওয়াল।
নির্মাতারা এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে সমাজের প্রতিক্রিয়া দেখে বোঝা যাচ্ছে, সিনেমাটি যদি ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও সামাজিক সংবেদনশীলতা বিবেচনা না করে নির্মিত হয়, তবে এর মুক্তি ঘিরে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।
এমআর/এসএন