মাস দুয়েক আগেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন বিরাট কোহলি। ভারতীয় তারকা ব্যাটারের আচমকা এমন সিদ্ধান্তে চমকে গিয়েছিল ক্রিকেট দুনিয়া। কিন্তু কেন হঠাৎ অবসরের মতো সিদ্ধান্ত—টেস্ট খেলার ধকল সামলাতে পারছেন না, নাকি ‘বাধ্য’ করা হয়েছে; এ নিয়ে জল্পনা কম হয়নি। অবশেষে বুঝিয়ে দিলেন বয়স হয়েছে বলেই ক্রিকেটের লম্বা ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি।
টেস্ট সিরিজ খেলতে ভারতীয় দল এখন ইংল্যান্ডে। কোহলিও লন্ডনে আছেন, তবে সস্ত্রীক উইম্বলডনে মজে আছেন। এরই ফাঁকে লন্ডনে যুবরাজ সিংয়ের ‘ইউ উই ক্যান’ ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। সেখানে মজার ছলে বলেন, “দু’দিন আগেই দাড়িতে কলপ করলাম। যখন চারদিন পরপর দাড়িতে কলপ করতে হয়, তখন বুঝতে হবে সময় এসে গিয়েছে।”
কোহলির এমন মন্তব্যে মনে হতে পারে, বয়সের কারণেই লাল বলের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। কিন্তু ফিটনেসে এখনো কোহলি টেক্কা দিতে পারেন অনেক তরুণ ক্রিকেটারকেও। যে কোনও ফরম্যাটে তাকে মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দিতে দেখা যায়। তা হলে হঠাৎ কেন নিজের ফিটনেসকে অবসরের কারণ হিসাবে তুলে ধরলেন কোহলি?এমন মন্তব্য অনেক ভক্তই মেনে নিতে পারছেন না। হেড কোচ গৌতম গম্ভীরের অধীনে ‘তারুণ্যেই’ বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। ‘দাড়ি পাকার’ তুলনা টেনে কি সেটাকেই খোঁচা দিলেন ‘অভিমানী’ কোহলি, এমন প্রশ্নও উঠছে।
যুবরাজ সিংয়ের ফাউন্ডেশনের ওই অনুষ্ঠানে তারার হাট বসেছিল যেন। রবি শাস্ত্রী, শচীন টেন্ডুলকর, কেভিন পিটারসেন এমনকী ব্রায়ান লারার মতো কিংবদন্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। শাস্ত্রীর সঙ্গে রসায়ন নিয়ে কোহলি বলেন, “ওর সঙ্গে কাজ না করলে টেস্ট ক্রিকেটে যা করেছি, তা হতো না। আমাদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া ছিল। উনি যদি আমার পাশে না দাঁড়াতেন, সমালোচনা সহ্য না করতেন, তাহলে পরিস্থিতি হয়তো অন্যরকম হতো। আমার ক্রিকেট সফরে ওর বিরাট অবদান।”
কোহলি যখন ভারতীয় দলে সুযোগ পান তখন যুবরাজ বড় তারকা। সেই যুবরাজের সঙ্গে অনেকটা সময় খেলেছেন তিনি। সেই কথাও জানিয়েছেন কোহলি। তিনি বলেন, “ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় প্রথম যুবরাজের সঙ্গে পরিচয়। ভারতের হয়ে যখন খেলা শুরু করেছিলাম, তখন যুবরাজ, জহির, হরভজনের মতো সিনিয়রকে পেয়েছি। ওরা আমাকে অনেক পরামর্শ দিয়েছে। ওদের সঙ্গে মাঠে অনেক ভালো মুহূর্ত কাটিয়েছি। যুবরাজ কী ভাবে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে ফিরে এসেছে তা দেখেছি।”
যখন যুবরাজের ক্যানসারের কথা জানা যায়, তখন কী প্রতিক্রিয়া ছিল? কোহলি বলছেন, ‘আমাদের মধ্যে মাঠে ও মাঠের বাইরে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। প্রচুর মজা করেছি। বিশ্বকাপের সময় ওকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তারপর যখন আমরা ক্যানসারের বিষয়ে জানতে পারলাম, তখন চমকে গিয়েছিলাম। এত কাছে থেকেও আমাদের কোনও ধারণা ছিল না। তারপর ও ক্যানসারের সঙ্গে লড়ে কামব্যাক করেছে, সে জন্যই ও চ্যাম্পিয়ন।’
ইউটি/এসএন