যখন সারা দেশ শুভাংশু শুক্লার মহাকাশযাত্রা নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতেছে, তখন নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে ভারতের প্রথম মহাকাশচারী রাকেশ শর্মার নাম। যিনি ১৯৮৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সয়ুজ টি-১১ নভোযানে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন। তাঁর সেই ঐতিহাসিক উক্তি “সারে জাহাঁ সে আচ্ছা” আজও ভারতীয় মহাকাশগাথার অমর স্মারক হয়ে আছে।
ঠিক এই নামেই এক সময় তৈরি হওয়ার কথা ছিল একটি চলচ্চিত্র। বলিউডের বড় তারকা শাহরুখ খানের অভিনয়ে রাকেশ শর্মার জীবনকে বড় পর্দায় তুলে ধরার পরিকল্পনা হয়েছিল। শাহরুখ নিজেই তাঁর অন্য এক সিনেমার প্রচারের সময় এই বায়োপিক নিশ্চিত করেছিলেন। প্রযোজক ছিলেন সিদ্ধার্থ রায় কাপুর, আর পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মহেশ মাথাই।
‘জিরো’ সিনেমার পরপরই এই বায়োপিক শুরুর পরিকল্পনা পাকা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বক্স অফিসে ‘জিরো’ ব্যর্থ হয়। সেই ধাক্কায় শাহরুখ খান নিজেই এই প্রকল্প থেকে সরে যান। শুটিং শুরুর এক মাস আগে তাঁর সরে যাওয়ায় হঠাৎ তৈরি হয় অনিশ্চয়তা।
প্রযোজকরা শাহরুখের বদলে অন্য মুখ খুঁজতে থাকেন। কখনো বলা হয়েছিল ভিকি কৌশলকে নেওয়ার কথা, কখনো ফারহান আখতার বা রাজকুমার রাওয়ের নাম শোনা গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারও সঙ্গেই চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। এই টানাপোড়েনের মধ্যে হারিয়ে যায় সেই স্বপ্নের বায়োপিকের আলো।
কিন্তু ইতিহাস থেমে থাকেনি। একসময়ের রাকেশ শর্মা যেখানে পথ দেখিয়েছিলেন, সেখান থেকে আজ ভারতের মহাকাশযাত্রা এগিয়ে গেছে আরও বহুদূর। সম্প্রতি শুভাংশু শুক্লা আধুনিক ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে এক বেসরকারি অভিযানে ড্রাগন নভোযানে চড়ে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছেন। এই সাফল্য দেশের মানুষকে আবার মহাকাশ নিয়ে স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
এমন এক সময়ে প্রশ্ন উঠছে রাকেশ শর্মার মত একজন কিংবদন্তি নায়কের জীবনী নিয়ে তৈরি হওয়া সিনেমা কি আবার ভাবনায় আনা যায় না? এই সিনেমা শুধু বিনোদন দিত না, বরং নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাত। শাহরুখ খান না হোক, অন্য কোনও অভিনেতার হাত ধরে যদি এই গল্প আবার পর্দায় ফিরে আসে, দর্শকরা যে তা সাদরে গ্রহণ করবে, তা বলাই যায়।
পিএ/এসএন