ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বয়স ৬০ বছর পেরিয়েছে। তিনি কবে অবসর নেবেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে অবসরের পর জীবন কেমন হবে, তা নিয়ে এবার খোলাখুলি জানালেন নিজেই। বললেন, কাজ থেকে সরে যাওয়ার পর পড়াশোনাই হবে তার জীবনের মূল সঙ্গী।
অমিত শাহ হুট করে অবসরের কথা কেন বলতে গেলেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা প্রশ্ন। রাজনীতির বাইরে ঠিক কেমন জীবন কাটাতে চান তার খোলসা করেন তিনি।তাতেই জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে শুধু অবসরজীবনের পরিকল্পনার কথাই জানিয়েছেন শাহ, অবসর নিতে চলেছেন বলে জানাননি।
বুধবার ‘সহকার সম্বাদ’ নামের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। সেখানে গুজরাট, মধ্য প্রদেশ এবং রাজস্থানের সমবায় সংস্থার সঙ্গে যুক্ত নারীদের সঙ্গে কথোপকথনে অংশ নেন তিনি। সেই মঞ্চেই নিজের অবসর পরিকল্পনার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক করেছি, অবসর নেওয়ার পর বাকি জীবনটা বেদ ও উপনিষদের পাঠেই কাটাব। পাশাপাশি প্রাকৃতিক চাষ নিয়েও পড়াশোনা করব।’ প্রাকৃতিক কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে শাহ আরো বলেন, ‘রাসায়নিক সার দিয়ে উৎপাদিত গম খেলে অনেক সময় নানা অসুখ হতে পারে। কিন্তু প্রাকৃতিক চাষ শুধু আমাদের শরীরকে রোগমুক্তই রাখে না, চাষের উৎপাদনও অনেক বেড়ে যায়।’
২০১৯ সাল থেকে অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। ২০২১ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সমবায় মন্ত্রকের দায়িত্বও পান।
সমবায়মন্ত্রী হওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে তিনি বলেন, ‘যখন আমি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলাম, সবাই বলেছিলেন—এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। কিন্তু যখন সমবায় মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হলো, আমি মনে করেছিলাম এটি স্বরাষ্ট্র দপ্তরের থেকেও বড় কাজ। কারণ এটি কৃষক, গরিব মানুষ, গ্রাম এবং পশুপাখিদের সঙ্গে যুক্ত।’
অনুষ্ঠানের আগে অমিত শাহের মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় সমবায় মন্ত্রণালয়ের তরফে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করে। তাতে বলা হয়, ‘সহযোগিতার মাধ্যমে সমৃদ্ধির যে দৃষ্টিভঙ্গির কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় কৃষকদের ক্ষমতায়ন করছে কেন্দ্রীয় সমবায় মন্ত্রণালয়। এতে গ্রামীণ অর্থনীতির পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিও শক্তিশালী হচ্ছে।’
অমিত শাহের এই বক্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, রাজনীতির বাইরেও তিনি একটি গভীর ও মননশীল অবসরজীবনের স্বপ্ন দেখছেন—যেখানে প্রাচীন ভারতীয় জ্ঞান ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপদ্ধতির প্রতিই থাকবে তার আসক্তি।
সূত্র : আননন্দবাজার, এবিপি আনন্দ
আরআর/টিএ