পারিবারিক কলহের জের ধরে চিত্র নায়িকা সাদিকা পারভীন পপির আপন চাচা ৭৩ বছর বয়সী মিয়া বাবর হোসেনকে খুলনার ‘মিয়াবাগ’ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাবর হোসেনের ভাইয়ের স্ত্রী, মেয়ে জামাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ফলে তিনি অন্যের বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি করেন।
বাবর হোসেন তার প্রতি জুলুমের বিচার ও নিজ বাড়িতে ওঠার আকুতি জানিয়েছেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার বাবা নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা জমিদার মৃত ইসমাঈল মিয়ার ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ব্যক্তি জীবনে তিনি ‘মিয়াবাগ’ নামক বাড়ির অন্যতম শরিক। তবে তার কোনো সন্তানাদি না থাকায় তিনি প্রায়ই ঢাকা থাকেন।
আর এই সুযোগে ভাইয়ের স্ত্রী শিউলি বেগম ও মেয়ে জামাই ব্যাংকের কর্মকর্তা তারেক আহমেদ চৌধুরী বাবর মিয়ার মায়ের রুম, ড্রইংরুম, গেস্টরুমসহ বিভিন্ন কক্ষ দখল করেছেন।
গত ৪ জুলাই বাড়ি ফিরে দেখতে পান তার ভাইয়ের স্ত্রী শিউলী বেগমের কক্ষ বাদে অন্য সব কক্ষ তালাবদ্ধ। শিউলী বেগম তখন বাবর মিয়াকে দ্বিতীয় তলায় থাকতে বলেন। পরের দিন ৫ জুলাই সকাল ৮টার দিকে শিউলী বেগম ও তার মেয়ে জামাই তারেক আহমেদ চৌধুরী আমাকে আধা ঘণ্টার মধ্যে বাবর মিয়াকে বাসা থেকে নেমে যেতে হুমকি দেন।
এক পর্যায়ের তাঁর (বাবর) মোবাইল ভেঙে ফেলে ও অপরিচিত লোকজন ডেকে এনে বাবর মিয়াকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
মিয়া বাবর হোসেন আরো বলেন, ‘জমিদারবাড়ির সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার ভয়ে নিশ্চুপ ছিলাম। পারিবারিক বিষয়গুলো ঘরের বাইরে আনতে চাইনি। কিন্তু জামাই নামধারী ব্যাংকের কর্মকর্তা তারেক আহমেদ চৌধুরীর অসৌজনমূলক আচরণ, প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি-ধমকি দিয়ে পরিবেশ অস্বাভাবিক করে তুলেছে। সে পুরো বাড়িটি দখলের চেষ্টা করছে।
বাবর হোসেন জানান, তিনি বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সোনাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তার পরও বাড়িতে উঠতে পারছেন না। তিনি এ ঘটনার প্রতিকার চান।
অবশ্য বাবর হোসেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার ভাইজি জামাই ব্যাংক কর্মকর্তা তারেক আহমেদ চৌধুরী। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন খুলনায় যাই না। আমাকে কেন জড়ানো হলো বুঝতে পারছি না। মিয়া বাবর হোসেন ৭ বছর আগে তার সম্পত্তি বিক্রি করে চলে গেছেন। তার আপন মামিকে ভাগিয়ে বিয়ে করার কারণে তার সাথে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির যে অংশটুকু তার ছিল সেটি তারই আপন ছোট ভাই চিত্রনায়িকা পপির বাবা আমির হোসেন টুলুর কাছে বিক্রি করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘টুলু জীবিত থাকাকালে ওই অংশটুকু তার মেয়ে খেয়ালীকে লিখে দেন। মিয়া বাবর হোসেন তার ফুফুর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট করেছেন। হাবিব নামের এক যুবক মিয়া বাড়ির সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য ও সম্পত্তি দখল করার জন্য কলকাঠি নাড়ছে।
এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে মিয়া বাবর হোসেন বলেন, তারেক সত্য তথ্য দেয়নি। তিনি জানান, নাবালককালে তিনি সম্পত্তির মালিকানা পেয়েছেন। আর কখনো কোনো জমি-জায়গা বিক্রি করেননি।
কেএন/টিএ