লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এ যেন এক রূপকথার প্রতিচ্ছবি! ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম শচীন টেন্ডুলকার জায়গা করে নিলেন লর্ডসের কিংবদন্তিদের গ্যালারিতে। এমসিসি মিউজিয়ামে উন্মোচিত হলো তার প্রতিকৃতি। ঘণ্টা বাজিয়ে টেস্ট ম্যাচ উদ্বোধনের সম্মানও পেলেন ‘লিটল মাস্টার’। এদিন পুরো লর্ডস যেন শুধুই শচীনের নামেই নিবেদিত।
শচীনের প্রতিকৃতি স্থাপনের মাধ্যমে কিংবদন্তিদের তালিকায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জায়গা করে নিলেন স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস, শেন ওয়ার্ন, ইয়ান বোথাম, কপিল দেব, সুনীল গাভাসকর ও রাহুল দ্রাবিড়ের মতো মহাতারকাদের পাশে। এই সম্মান শুধু একজন ক্রিকেটারের নয়, এ ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসেরই গর্বের মুহূর্ত।
প্রতিকৃতিটি এঁকেছেন খ্যাতনামা শিল্পী স্টুয়ার্ট পিয়ার্সন রাইট। ছবিটি ১৮ বছর আগে তোলা হয়েছিল, তবে এবারে তা বিশেষভাবে রূপ দেওয়া হয়েছে।
শচীনের কাঁধ পর্যন্ত আঁকা হয়েছে প্রতিকৃতিটি, পুরো শরীর নয়। শিল্পী জানান, শচীনের বিশাল ব্যক্তিত্বকে ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ ভাবমূর্তি হিসেবে উপস্থাপন করতেই এই ভিন্ন উপস্থাপনা।
এমসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত ছবিটি থাকবে মিউজিয়ামে। এরপর তা স্থান পাবে প্যাভিলিয়নের ভিতরে—যেখানে জায়গা মেলে কেবল শ্রেষ্ঠদেরই।
একটা ছবি, একটা জায়গা আর এক জীবনের সারাংশ-শচীনের চোখে সেটা শুধুই প্রতীক নয়, অনুভূতির কেন্দ্র। নিজেই বললেন, ‘১৯৮৩ সালে ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল। তখনই প্রথম লর্ডসের নাম শুনি। সেই মুহূর্ত থেকেই আমার ক্রিকেটের স্বপ্ন শুরু। এত বছর পর সেই লর্ডসেই আমার প্রতিকৃতি জায়গা পেল। মনে হচ্ছে যেন এক পূর্ণ বৃত্ত ঘুরে এলাম। এটা নিঃসন্দেহে আমার জীবনের অন্যতম স্পেশাল মুহূর্ত।’
টেস্ট ক্রিকেটের তীর্থ হিসেবে পরিচিত লর্ডস স্টেডিয়ামে এই সম্মান পাওয়া মানেই ক্রিকেট ইতিহাসের স্থায়ী অংশ হয়ে যাওয়া। যদিও শচীন তার ক্যারিয়ারে লর্ডসে কোনও শতরান পাননি, তবুও ক্রিকেট দুনিয়ার প্রতি তার অবদান এই সীমাকে বহু আগেই অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একশোটি সেঞ্চুরি, দুই দশকের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকতা এবং এক নিঃসঙ্গ প্রতিমূর্তি-শচীন নিজেই যেন এক প্রতিষ্ঠান!
এমআর/এসএন