বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। শুক্রবার (১১ জুলাই) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমাণ্ডুগামী বিমানের একটি ফ্লাইটে বোমা থাকার মিথ্যা খবর ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনার পর আজ শনিবার বেবিচক এ সতর্কবার্তা দেয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। গতকালের ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা ও বিমান চলাচলের সুষ্ঠুতা বেবিচকের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।’
বেসামরিক বিমান চলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ইচ্ছাকৃত বা বেপরোয়াভাবে বিমান চলাচলে হুমকি সৃষ্টিকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
শুক্রবার এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে ফোন করে জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমাণ্ডুগামী বিমানের বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটে বোমা রাখা হয়েছে। ফ্লাইটটিতে ১৪২ জন যাত্রী এবং সাতজন ক্রু ছিলেন।
বেবিচকের নির্দেশ অনুসারে, বিমানবাহিনীর টাস্কফোর্স ও এভসেক দ্রুত বিমানটির চারপাশে একটি নিরাপত্তাব্যবস্থা স্থাপন করে। বিমানবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল, এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড এবং র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট বিমান এবং লাগেজগুলোতে তল্লাশি চালায়।
যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে লাউঞ্জে রাখা হয় এবং অন্য ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক থাকে। সন্ধ্যা ৭টা ৫৮ মিনিটে তল্লাশি শেষ হয়। কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। রাত ৯টা ২২ মিনিটে বিমানটি কাঠমাণ্ডুর উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
আজ এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহীদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।’
তদন্তে জানা গেছে, ভুয়া ফোন করেছিলেন বিমানের এক যাত্রীর মা। তিনি তার ছেলেকে তার পরকীয়া সঙ্গীর সঙ্গে কাঠমাণ্ডু যেতে বাধা দিতেই এ ধরনের মিথ্যা হুমকি দেন।
র্যাব মহাপরিচালক ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এ ধরনের কাজ দেশের ভাবমূর্তি ও জাতীয় বিমান সংস্থার সুনাম ক্ষুণ্ন করে।
তিনি বলেন, ‘কোনো পরিস্থিতিতেই এই ধরনের প্রচেষ্টা করা উচিত নয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরআর/টিকে