কানাডায় নিজের স্বপ্নের ব্যবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা করতে গিয়ে রীতিমতো আতঙ্কের মুখে পড়েছেন ভারতের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কপিল শর্মা। বলিউডের কমেডি শো ছেড়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন কানাডায়, সেখানে নতুন করে জীবনের অধ্যায় শুরু করেছিলেন ‘ক্যাপস ক্যাফে’ নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলে। তবে সেই স্বপ্নের ঠিকানা এখন ভয় আর হুমকির নামান্তর।
রেস্তোরাঁ চালু হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে গভীর রাতে তার ক্যাফের ওপর গুলি চালানো হয়। গত ৯ জুলাই রাত ১টার দিকে যখন ক্যাফে বন্ধ, ঠিক তখনই পরপর গুলি চলে, চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এই হামলার দায় স্বীকার করে নেয় খলিস্তানি সমর্থক হরজিৎ সিংহ লাড্ডি। হামলার উদ্দেশ্য যে শুধু শাসানি দিয়ে ভয় দেখানো, তা হামলার ধরনেই স্পষ্ট।
তবে ঘটনাটি এখানেই থেমে থাকেনি। হামলার চার দিনের মধ্যেই কপিল শর্মাকে আরও স্পষ্ট হুমকি দেওয়া হয়েছে। শিখ ফর জাস্টিস নামের সংগঠনের নেতা গুরপাটওয়ান্ত সিংহ পন্নু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কপিলকে ব্যবসা গুটিয়ে ভারতের মাটিতে ফিরতে হবে। তিনি বলেন, “মোদী অনুগত ব্যবসায়ীদের কানাডায় কোনো স্থান নেই। রক্তে ভেজা টাকা নিয়ে ভারতে ফিরে যাও। কানাডা উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সমর্থন করে না।” কপিল বা অন্য কারো মোদীর নাম উচ্চারণও যেন না করা হয় — এমন হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
হরজিৎ সিংহ লাড্ডি আরও দাবি করেছেন, কপিল শর্মার কিছু কথাবার্তা তার অপছন্দ হয়েছে, সেই কারণেই এই হামলা। কপিলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কপিল শর্মার এই বিপদের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার ভক্তরা যেমন শঙ্কিত, তেমনি ক্ষুব্ধও।
এই ঘটনা অবশ্য কানাডায় নতুন নয়। এর আগেও পাঞ্জাবি শিল্পীদের ওপর এমন হামলা হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভ্যাঙ্কুভারে গায়ক এপি ধিলোঁর বাড়িতেও গুলি চলে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে অভিনেতা ও গায়ক গিপ্পি গ্রেওয়ালের বাড়ির সামনেও হামলা হয়, যার দায় স্বীকার করেছিল সিধু মুসেওয়ালা হত্যায় অভিযুক্ত লরেন্স বিশ্নোইয়ের গোষ্ঠী।
কানাডায় সম্প্রতি অভিবাসী ভারতীয়দের একটি অংশের মধ্যে খলিস্তানি প্রভাব বৃদ্ধির পর এমন সহিংসতা ও হুমকি ক্রমেই বাড়ছে। কপিল শর্মার মতো এক জনপ্রিয় শিল্পী যখন এভাবে টার্গেট হন, তখন তা শুধু তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নয়, বরং অভিবাসী ভারতীয় সমাজের নিরাপত্তা নিয়েই বড় প্রশ্ন তোলে।
ইউটি/টিএ