অঙ্গ প্রতিস্থাপনে ক্যান্সারের ঝুঁকি

প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হচ্ছে অঙ্গ প্রতিস্থাপন। এ পদ্ধতিতে একজনের অঙ্গ অন্য একজনের মধ্যে প্রতিস্থাপন করে রোগীকে সুস্থ করা হয়। অবাক করার বিষয়, সম্প্রতি চীনের এক গবেষক একজনের মাথা অন্যজনের মাথায় প্রতিস্থাপন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ফলে সুস্থ হওয়া রোগীর ভবিষ্যতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছর আগে নিউ ক্যাসেল ফ্রিম্যান হসপিটালে টম টায়ারম্যান (৬৩) নামে একজন রোগীর অপারেশন হয়। সফল অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে লিভার প্রতিস্থাপন করে ওই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে লোকটি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

পরে এক গবেষণায় দেখা যায় যে, যার অঙ্গ ওই ব্যক্তির অঙ্গে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, তাতে একটি ছোট টিউমার ছিল। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পূর্বে করা স্ক্রিনিং টেস্টে এই টিউমার ধরা পড়েনি।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, এরকম করুন পরিণতি হবে বিষয়টি তারা আগে অনুমান করতে পারেননি।

পলিন হান্ট (৪৯) নামে ওপর এক নারী, যার কিডনি একই দাতা ব্যক্তির কিডনি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই মহিলাও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

টায়ারম্যানের বোন জন বার্ড বলেন, চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে তার ভাইয়ের ইমিউনি সিস্টেম অকার্যকর হয়ে গেছে। তাই তার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে প্রতিস্থাপিত অঙ্গ থেকে ক্যান্সার হতে পারে এটা চিকিৎসকরা তাদেরকে বলেননি। তাই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পূর্বে আরও কঠোর ও নিখুঁতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

একজনের ক্যান্সার আরেকজন বহন করে লড়াই করবে তা হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন জন বার্ড।

এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পূর্বে দাতা ব্যক্তির স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ইতিহাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপনের পূর্বে চলা সীমিত সময়ের পরীক্ষায় দাতা ব্যক্তির অঙ্গের ক্ষুদ্র টিউমার ধরা পড়ে না।

তাই এ ধরণের ঘটনা সচরাচর না ঘটলেও প্রতিস্থাপনের পূর্বে ক্যান্সার সনাক্ত না করা গেলে পরবর্তীতে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ওসমান হাদি হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন অটোরিকশা চালক Dec 26, 2025
img
১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে কি না, সে সংশয় আর নেই: শফিকুল আলম Dec 26, 2025
img
অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ হারালেন আসিফ মাহমুদ Dec 26, 2025
img
আজ থেকে বিপিএল ২০২৬ শুরু, একনজরে পূর্ণাঙ্গ ম্যাচ সূচি Dec 26, 2025
img
বড় পদক্ষেপ নিলেন কিম জং উন Dec 26, 2025
img
নতুন বছরের শুরুতে আসছে ইমনের সিনেমা ‘ময়নার চর’ Dec 26, 2025
img
সমাবেশের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত গাছ আবার লাগানোর ঘোষণা বিএনপির Dec 26, 2025
img
সারাদেশের ৭টি জেলার উপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ Dec 26, 2025
img
“আপনার নেতৃত্বে এ দেশে শান্তি ফিরুক” বললেন অভিনেতা খায়রুল বাসার Dec 26, 2025
img
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আগুন, ২টি ঝুটের গুদাম পুড়ে ছাই Dec 26, 2025
img
৩০০ ফুট থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করছে ঢাকা উত্তর বিএনপি Dec 26, 2025
img
রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণের সময়ে পর্যটকবাহী বোট ডুবি Dec 26, 2025
img
রোনালদোর প্রাপ্য এখনও বাকি, মেসির উদাহরণ টেনে মন্তব্য ফরাসি কিংবদন্তির Dec 26, 2025
img
ঘন কুয়াশায় ঢাকায় নামতে না পেরে কলকাতায় ৫ ফ্লাইটের অবতরণ Dec 26, 2025
img
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ‘হাঁস’ প্রতীক চাইবেন রুমিন ফারহানা Dec 26, 2025
img
হাদি হত্যার বিচার দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ আজ Dec 26, 2025
img
মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে নিহত সংখ্যা বেড়ে ৮ Dec 26, 2025
img
কারিনা কাপুর আমার স্ত্রী ছিলেন বলে দাবি ‘মুফতি’ কাভির Dec 26, 2025
img
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ও তারেক রহমান দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : জাহেদ উর রহমান Dec 26, 2025
img
‘টাকার অভাবে’ নির্বাচন করতে পারছে না ইউক্রেন, দাবি জেলেনস্কির উপদেষ্টার Dec 26, 2025