উলফা ঘাঁটিতে ভারতের হামলা, মিয়ানমারে শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ৩

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) মিয়ানমারে অবস্থিত ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় সংগঠনটির অন্তত তিন শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন। রোববার ভোরের দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী এই হামলা চালায় বলে দাবি করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী এই গোষ্ঠী।

উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের জাতিগত, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্ত লাগোয়া কিছু এলাকায় ভারতীয় বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যদের ঘাঁটি রয়েছে।

মিয়ানমারে উলফার ঘাঁটিতে ভারতের সামরিক বাহিনীর এই হামলার বিষয়ে একাধিক বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি। আসাম রাজ্যের স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে লড়াই চালিয়ে আসা ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) বলেছে, মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম দফার ড্রোন হামলায় তাদের একজন শীর্ষ কমান্ডার নিহত ও আরও ১৯ জন আহত হয়েছেন।

সংগঠনটি বলেছে, দ্বিতীয় দফার হামলায় তাদের আরও দু’জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় উলফার আরও অনেক সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য কিংবা হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। উলফা বলেছে, মিয়ানমারের গহীন জঙ্গলে উলফার পাশাপাশি পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) নামের আরেকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ঘাঁটিতেও হামলা হয়েছে।

ভারতের যে কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চালিয়ে আসছে তাদের মধ্যে উলফা অন্যতম। এই সংগঠনটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের স্বাধীনতা চায়। আর পিএলএ মণিপুর রাজ্যের স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই করছে।

যদিও ২০২৩ সালে উলফা একটি অংশ ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছায়। ওই চুক্তির পর সংগঠনটি অস্ত্র ত্যাগের ঘোষণা দেয়। গত কয়েক বছরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বিদ্রোহীদের হামলার সংখ্যা অনেক কমেছে। তারপরও গত তিন দশকে এ ধরনের সহিংসতায় দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

এমকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শেখ মুজিব দেশকে পাকিস্তানের বদলে ভারত বানিয়েছিল: রাশেদ প্রধান Nov 19, 2025
img
নাসিরুদ্দিনের বক্তব্যে খারাপ লেগেছিল ফারহানের Nov 19, 2025
img
আদানি গ্রুপের সিঙ্গাপুরে সালিশি কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা Nov 19, 2025
img
সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসিকে শক্ত অবস্থানে থাকার আহ্বান মঈন খানের Nov 19, 2025
img
বিশ্ববাজারে বেড়েছে স্বর্ণের দাম Nov 19, 2025
img
টাকা খরচ না করেও কি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যায় প্রশ্ন মির্জা গালিবের Nov 19, 2025
img
মডেল-অভিনেত্রী জিনা লিমা আর নেই Nov 19, 2025
img
মুশফিককে শুভেচ্ছা জানালেন কিংবদন্তি রিকি পন্টিং Nov 19, 2025
img
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস আজ Nov 19, 2025
img
সংস্কারের একক দাবি সংকীর্ণ মানসিকতা, ৩১ দফায় তা চূড়ান্ত হয়েছে: মির্জা ফখরুল Nov 19, 2025
img
‘বাহুবলী’র পরিচালকের নামে মামলা Nov 19, 2025
img
অক্টোবরে সড়কে মৃত্যু বেড়েছে ৫.৭৫ শতাংশ: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন Nov 19, 2025
img
মুশফিকের লম্বা ক্যারিয়ারের রহস্য নিয়ে মাহমুদউল্লাহর মন্তব্য Nov 19, 2025
img
রাফিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুললেন ঢাবি শিক্ষিকা মোনামি Nov 19, 2025
img
কেউ ভোট হাইজ্যাক করতে চাইলে যুবক হয়ে বিস্ফোরিত হবো : জামায়াত আমির Nov 19, 2025
img
গণভোটের রূপরেখা দ্রুত চায় এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী Nov 19, 2025
img
‘দাবাং ৪’ নিয়ে ইঙ্গিত দিলেন আরবাজ Nov 19, 2025
img
এপস্টেইন ফাইলস প্রকাশের অনুমতি মার্কিন কংগ্রেসের Nov 19, 2025
img
প্রচারে তারেক ও জিয়ার ছবি ব্যবহার করা যাবে না, ইসিকে এনসিপি Nov 19, 2025
img
ব্যর্থ রাষ্ট্র না চাইলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে: মির্জা ফখরুল Nov 19, 2025