মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা গেল ইরানি ফুটবল রেফারি আলিরেজা ফাঘানিকে। ওই সময় তিনি খুব হাসিখুশি ছিলেন। ফুটবল মাঠে এক ফটোসেশনে ট্রাম্পের সঙ্গে থাম্বস আপ ভঙ্গিতেও দেখা যায় তাকে। ছড়িয়ে পড় সেই ছবি ইসলামিক রিপাবলিক-ইরানে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মদদে ইরানে ইসরায়েল হামলা করে। পাল্টা হামলায় ইসরায়েল যখন বিপর্যস্ত তখন বি-২ বোম্বার পাঠিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি বাঙ্কার বাস্টার ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। এসব ঘটনায় তেহরানে জাতীয়তাবাদ আরও প্রগাঢ়।
ট্রাম্পের নাম শুনতেই ইরানিদের গায়ে যেন আগুন ধরে যাচ্ছে। সেই অবস্থাতেই বিশ্ব মঞ্চে ইরানি রেফারি আলিরেজা ফাঘানি ‘থাম্বস আপ’ কাণ্ড ঘটান।
জানা গেছে, ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের পদক প্রদান অনুষ্ঠানে ইরানি ফুটবল রেফারি আলিরেজা ফাঘানির মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সান্নিধ্যে আসেন। তারা থাম্বস আপ ভঙ্গিতে ছবি তুলেন। এ ঘটনা ইসলামিক রিপাবলিকের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচে চেলসি প্যারিস সেন্ট-জার্মেইঁকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে।
ফাঘানি বিশ্বের অন্যতম প্রখ্যাত রেফারিদের একজন। এই ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১৯ সালে ইরানের ফুটবল ফেডারেশনের সাথে মতবিরোধের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হন। তখন থেকে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি।
রেভল্যুশনারি গার্ডস-সমর্থিত ফার্স নিউজ এজেন্সি শনিবার তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, ইরানের ভূমিতে ইসরায়েল ও আমেরিকার হামলা এবং এক হাজারেরও বেশি ইরানির শহীদ হওয়ার কয়েকদিন পর আলিরেজা ফাঘানি পুরস্কার গ্রহণের মঞ্চে ট্রাম্পকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। স্মারক ছবিতে তার (ট্রাম্পের) ভঙ্গির অনুকরণ করেন।
ফাঘানি পরে ইনস্টাগ্রামে টুর্নামেন্টে তার কাজের এবং ট্রাম্পের পাশে ভঙ্গি নিয়ে তোলা ছবি পোস্ট করে লেখেন, আবারও ফুটবল ইতিহাসের অংশ হওয়ার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ।
সরকারপন্থী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এই ঘটনাকে জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে সমালোচনা করেছেন। থার্ড জেনারেশন খোমেনি রেভল্যুশন নামে এক্স-হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, আলিরেজা ফাঘানি ইরানে তার সকল শিক্ষাগত ডিগ্রি (ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি) সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তার মাতৃভূমির আক্রমণকারী এবং ইরানি নারী ও শিশুদের হত্যাকারীর সাথে স্মারক ছবি তুললেন।
এমআর/টিকে