ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) দেশের সব এয়ারলাইন্সকে বোয়িং বিমানের জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে।
গত জুনে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সোমবার ভারতের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যেই নিজ উদ্যোগে এই পরীক্ষা শুরু করেছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানায়, বোয়িং বিমানের জ্বালানি সুইচগুলো নিরাপদ। তবে ভারতের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, উড্ডয়নের ঠিক পরপরই বিমানের ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১-এ এই ঘটনাটি ঘটে। এটি একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এবং এটি ছিল গত এক দশকে বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি।
ভারতের ডিজিসিএ জানিয়েছে, ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সব বোয়িং বিমানে জ্বালানি সুইচ পরীক্ষা শেষ করতে হবে। তারা বলেছে, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করাটা অত্যন্ত জরুরি, যাতে বিমানের উড্ডয়ন নিরাপদ থাকে।”
এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৮ সালের এফএএ অ্যাডভাইজরি অনুসরণ করে দেওয়া হয়েছে। তখন এফএএ বলেছিল, বোয়িং অপারেটরদের জ্বালানি সুইচের লকিং সিস্টেম পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যেন তা ভুলবশত নাড়ানো না যায়। যদিও সেটি বাধ্যতামূলক ছিল না।
এয়ার ইন্ডিয়া ওই পরীক্ষা করেনি কারণ তা বাধ্যতামূলক ছিল না বলে জানিয়েছে ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। এখন ডিজিসিএ সেই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে এবং প্রত্যেক এয়ারলাইন্সকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।
একইসঙ্গে, ইন্ডিয়ান কমার্শিয়াল পাইলটস অ্যাসোসিয়েশন (আইসিপিএ) বলেছে, ফ্লাইটের পাইলটরা তাদের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছেন এবং অনুমানভিত্তিক অভিযোগে তাদের দোষারোপ করা অনুচিত।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১-এর ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ে একজন পাইলটকে বলতে শোনা যায়, “তুমি কেন সুইচ বন্ধ করে দিলে?”— উত্তরে অন্যজন বলেন, “আমি করিনি”।
প্রতিবেদনটি স্পষ্ট করে বলেছে, এর উদ্দেশ্য দোষী নির্ধারণ করা নয়, বরং ঘটনার কারণ অনুসন্ধান। বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়াও শিগগিরই তাদের বোয়িং পরিচালনাকারী এয়ারলাইন্সগুলোকে একই রকম জ্বালানি সুইচ পরীক্ষা করার নির্দেশ দিতে যাচ্ছে।
এফপি/ টিকে