যে কারনে বার বার প্রত্যাখ্যান হচ্ছে বাংলাদেশিদের ভিসা

ভিসা জটিলতা যেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের এক চিরায়ত সমস্যা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত, নানা দেশে ভিসা পাওয়ায় ব্যাপক সমস্যার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা। ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া এবং জাল নথিপত্রের কারণে সৃষ্ট উদ্বেগ এখন এক পূর্ণাঙ্গ সংকটে পরিণত হয়েছে, যা দেশের বহির্মুখী পর্যটন, কর্পোরেট ভ্রমণ এবং শ্রম অভিবাসন খাতকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে।

তথ্য অনুযায়ী, একাধিক দেশ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা প্রদান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ বা কঠোর করেছে। বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশগুলো যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও মালয়েশিয়ায় স্বল্প দক্ষ কর্মীদের ভিসা নিষিদ্ধ করেছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে জালিয়াতি, নিয়োগ কেলেঙ্কারির অভিযোগ এবং শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতার ঘটনা বলা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভিয়েতনাম, লাওস, মিশর, উজবেকিস্তান ও কাজাখস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সঙ্কুচিত বা বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে বিদেশগামী পর্যটন এবং ব্যবসায়িক ভ্রমণ যথেষ্ট কমে গেছে। বাংলাদেশ আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটরস ফোরামের তথ্য মতে, গত এক বছরে পর্যটন কার্যক্রমে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ এবং কর্পোরেট ভ্রমণে ৭০ শতাংশ হ্রাস ঘটেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুত্র জানায়, তারা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিশ্বব্যাপী মানব পাচার ও ভিসা জালিয়াতি একটি গুরুতর উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দেশগুলোর কঠোর অবস্থানের মূল কারণ। ভিসা বিধিনিষ্ক্রিয়তার কারণে বাংলাদেশিরা এখন শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটানের মতো বিকল্প গন্তব্যে ভ্রমণ করছেন। তবে বিমান ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে অবসর যাত্রীরা ভ্রমণেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি ভিসা সমস্যায় বড় ভূমিকা রাখছে। গণতান্ত্রিক সংকোচন, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে বাংলাদেশি পর্যটন, ব্যবসা ও শ্রম অভিবাসন খাতের জন্য গুরুতর প্রভাব পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে বাউবির সমন্বিত পরিকল্পনা Jul 16, 2025
img
সাভারে হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার Jul 16, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ইন্দোনেশিয়ার, নতুন শুল্ক ১৯ শতাংশ Jul 16, 2025
img
এবার আমাদের লক্ষ্য সংসদ ভবন : নাহিদ Jul 16, 2025
img
অ্যাশেজ খেলার জন্য যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত আর্চার Jul 16, 2025
img
কলাপাড়ায় ইউএনওর বদলিতে মিষ্টি বিতরণ Jul 16, 2025
img
সিলেবাস সংস্কারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউনিসেফের চুক্তি Jul 16, 2025
img
আবরার ফাহাদকে আসলেই ওরা মারতে পারে নাই, ডকুমেন্টারিটা দেখা শেষ করে স্তব্ধ হয়ে থাকলাম : সংস্কৃতি উপদেষ্টা Jul 16, 2025
কনার ডিভোর্স পেপারে দেখা গেল নুসরাত ফারিয়ার নাম Jul 16, 2025
img
বিরল ঘটনা, পবিত্র কাবাঘরের ঠিক উপরে সূর্যের অবস্থান Jul 16, 2025
img
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল শতবর্ষী কিংবদন্তি দৌড়বিদ ফৌজা সিংয়ের Jul 16, 2025
img
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে প্রাণ হারাল ১ জন Jul 16, 2025
img
দেশে কোনো হত্যাকাণ্ডই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কিংবা সাম্প্রদায়িকতার কারণে সংঘটিত হয়নি : পুলিশ সদর দপ্তর Jul 16, 2025
কুড়িগ্রামে শহীদ পরিবারের পাশে রিজভী, জানালেন আন্দোলনের পটভূমি Jul 16, 2025
img
নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলোকে ত্রুটি সংশোধনে ১৫ দিন সময় দিয়ে ইসির চিঠি Jul 16, 2025
img
জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ জুলাই দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত Jul 16, 2025
img
পার্বত্য এলাকায় একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে : সুপ্রদীপ চাকমা Jul 16, 2025
img
রাজশাহীতে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীসহ আটক ২০ জন Jul 16, 2025
img
রাজশাহীর বাগমারায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারাল এক যুবক Jul 16, 2025
img
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের নির্দেশ মাউশি’র Jul 16, 2025