ভারতের রুপালি দুনিয়ায় নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করেছিলেন গায়ের রঙকে ভালোবেসেই। কিন্তু সেই সংগ্রামী পথচলার পরিণতি হল মর্মান্তিক। মাত্র ২৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন মডেল স্যান রেচেল। পুদুচেরির জওহরলাল ইনস্টিটিউট অফ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (জিম্পার)-এ রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্যান রেচেল নিজের বাবার বাড়িতে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ইন্দিরা গান্ধী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করে শেষে ভর্তি করা হয় জিম্পার-এ, সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই তরুণী।
পুলিশ তাঁর বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। তাতে স্পষ্ট লেখা ছিল—এই মৃত্যুর জন্য কারও দায় নেই।
স্যানের জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা পুদুচেরিতেই। ছোটবেলাতেই মা-কে হারান, বাবার হাত ধরেই মডেলিং জগতে প্রবেশ। গায়ের রঙের কারণে বহু কাজ হাতছাড়া হলেও দমে যাননি তিনি। বরং সেই অপমানকে নিজের অস্ত্র করে মঞ্চ থেকে মঞ্চে ছড়িয়ে দিয়েছেন আত্মবিশ্বাসের গল্প।
‘মিস ডার্ক কুইন তামিলনাড়ু’, ‘মিস বেস্ট অ্যাটিটিউড’-এর মতো খেতাব জিতে ফেলেন। শুধু ভারত নয়, লন্ডন, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্সে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
তিনি সবসময় বিশ্বাস করতেন, সৌন্দর্যের কোনও রং হয় না। নিজেই বহুবার বলেছেন—রূপালি দুনিয়ায় জায়গা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেকের আছে, গায়ের রঙে তার বিচার হওয়া অনুচিত। তাঁর সাহস, মনোভাব, এবং প্রতিবাদী কণ্ঠ বহু তরুণীকে অনুপ্রাণিত করেছে।
সম্প্রতি বিয়ে করেছিলেন, স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন। জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা দিয়েও কেন এমন সিদ্ধান্ত, সেই প্রশ্নে এখন স্তব্ধ সবাই।
একজন সংগ্রামী নারীর এভাবে বিদায় শুধু এক ব্যক্তির নয়, হারিয়ে গেল এক প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর।
এসএন