মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্রাজিলের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কড়া সমালোচনা করে তা প্রতিরোধের অঙ্গীকার করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, "ব্রাজিল কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া মেনে নেবে না। আমরা আলোচনায় বিশ্বাসী, জবরদস্তিতে নয়।"
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লুলা জানান, ট্রাম্পের ঘোষণায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন, বিশেষ করে যেভাবে এটি জানানো হয়েছে। ট্রাম্প নিজের সামাজিক মাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ পোস্ট করা এক চিঠিতে জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে ব্রাজিলের সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। ওই চিঠিতে তিনি ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান মামলাকে 'উইচ হান্ট' বলে মন্তব্য করেন এবং তা বন্ধের আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে লুলা বলেন, "আমি যখন চিঠিটি পড়ি, মনে হয়েছিল, এটি ভুয়া খবর। এটা কোনো কূটনৈতিক রীতিনীতি মেনে হয়নি, বরং দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সম্পর্কের সব ধরনের প্রটোকল ভেঙে দেওয়া হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "আমরা চাই না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভুলে যাবেন যে, তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট—তিনি পৃথিবীর বাদশাহ নন।"
লুলা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, "ব্রাজিল তার জনগণের স্বার্থরক্ষায় নিজের মতো করেই জবাব দেবে। আমরা ইতোমধ্যে সম্ভাব্য জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।" যদিও ট্রাম্প পাল্টাব্যবস্থা নেওয়া হলে শুল্কের হার আরও বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন।
তবে লুলা আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছেন। তিনি বলেন, "যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আন্তরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের মধ্যে চলমান আলোচনাকে গুরুত্ব দেন, তবে আমি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।" ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেন, গত ১৫ বছরে ব্রাজিলের সঙ্গে বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪১০ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি হয়েছে এবং ব্রাজিলের 'অন্যায্য বাণিজ্যনীতি' নিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্তও শুরু হয়েছে। ট্রাম্প ব্রিকস জোটের দেশগুলোর ওপরও অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন, এই জোট 'বিশ্ব মুদ্রা হিসেবে ডলার ধ্বংসে' কাজ করছে। এছাড়া তিনি হুমকি দিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে, যদি ইউক্রেন যুদ্ধ ৫০ দিনের মধ্যে শেষ না হয়।
এই মুহূর্তে ট্রাম্পঘোষিত ৫০ শতাংশ শুল্কই ব্রাজিলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ হার।
এফপি/টিএ