ডেমোক্রেটিক রাজনীতিক ও সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল কেলেঙ্কারির মামলা নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে। সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ওবামা প্রশাসনে দায়িত্ব পালনকালে হিলারির ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার ব্যবহার এবং অতি গোপন নথিপত্রের ভুল ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়টি ঠিকমতো তদন্ত করেনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
২০১৮ সালের জুনে মার্কিন বিচার বিভাগের ইনস্পেক্টর জেনারেলের একটি রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এফবিআই এক ‘গোপন সূত্র’ থেকে কিছু থাম্ব ড্রাইভ পায়। যাতে সাইবার অনুপ্রবেশের মাধ্যমে সংগৃহীত সরকারিভাবে সংবেদনশীল তথ্য এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ইমেইলও ছিল।
অথচ এফবিআই সেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো ‘উপেক্ষা’ করেছে বলে রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট সামনে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড অভিযোগ করেন, ওবামা প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া সংযোগ নিয়ে ‘মিথ্যা প্রচারণা’ চালিয়েছিল। রিপাবলিকানরা এর মধ্যেই এফবিআই ও ওবামা প্রশাসনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।
মার্কিন সিনেটর চাক গ্রাসলির কার্যালয় সোমবার (২১ জুলাই) মার্কিন বিচার বিভাগের ‘ক্লিনটন অ্যানেক্স’ শীর্ষক রিপোর্টের উপর একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, তৎকালীন এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি, উপ-পরিচালক অ্যান্ড্রু ম্যাককেব, সাবেক এজেন্ট পিটার স্ট্রজোক এবং অন্যরা গোপন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যগুলোতে নির্দিষ্ট তদন্ত চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন, যদিও তাদের কাছে তদন্তের প্রাসঙ্গিক তথ্য ছিল।
গ্রাসলি বলেছেন, ‘সদ্য প্রকাশিত নথিটি থেকে এটা স্পষ্ট যে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার ব্যবহার এবং অত্যন্ত গোপনীয় তথ্যের ভুল ব্যবহারের বিষয়ে এফবিআইয়ের তদন্তে প্রচেষ্টা এবং যথাযথ পরিশ্রমের চরম অভাব ছিল।’
হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যক্তিগত সার্ভার থেকে ইমেইল আদান-প্রদান করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে আদান-প্রদান করা ইমেইলগুলোতে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়েরও উল্লেখ ছিল।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দল থেকে প্রার্থী হওয়ার পর ইমেইল কেলেঙ্কারির বিষয়টি সামনে আসে। বিরোধীদের অভিযোগ, অনিরাপদ সিস্টেম ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছেন হিলারি। তবে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহারের কথা স্বীকার করলেও হিলারি দাবি করেন, তিনি ভুল কিছু করেননি।
বিষয়টি তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হলে হিলারির ১৪ হাজার ৯০০ ইমেইল ও তাতে যুক্ত গোপন নথি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন আদালত। বিষয়টি তদন্তের পর এফবিআই জানায়, তদন্ত করে ক্লিনটনের বিরুদ্ধে অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এফবিআই পরিচালক কোমি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার সময় ইমেইল ব্যাবহার করা নিয়ে যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল, এই নিয়ে তদন্তের পর দেখা যাচ্ছে যে, ক্লিনটনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করাটা উচিত হবে না।
এফপি/ টিএ