কেরালায় কাঁঠাল খেয়ে বাস চালানোয় ৩ চালককে আটক করেছে পুলিশ। ‘মদ খেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন’ সন্দেহে আটক করা হয় তাদেরকে, পরে অবশ্য ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক সংবাদামাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, মদ্যপান করে কেউ গাড়ি চালাচ্ছেন কি না, তা পরীক্ষা করছিলেন পুলিশকর্মীরা। সেই সময় সরকারি বাসের তিন চালককে ‘মদ্যপানের’ জন্য গ্রেফতার করা হয়। তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তোলেন চালকেরা। তখন তাদের জানানো হয়, মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
পুলিশকর্মীদের এমন দাবি শুনে প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে যান বাসচালকেরা। পরে তারা পাল্টা দাবি করেন, মদ্যপান করেননি। পুলিশকর্মীরা তখন তাদের ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ যন্ত্রে ফুঁ দিতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রটি ইঙ্গিত দেয় যে চালকেরা মদ্যপান করেছেন।
কেউ মদ্যপান করেছেন কি না তা যাচাই করার যন্ত্রই হল ব্রেথ অ্যআনালাইজার। এই যন্ত্রটিতে মুখ লাগিয়ে জোরে ফুঁ দিতে বলা হয়। তখনই যন্ত্রটি ইঙ্গিত দেয় ওই ব্যক্তি মদ্যপান করেছেন, না কি করেননি।
কিন্তু কেরালা তিন বাসচালক মদ্যপান না করা সত্ত্বেও যন্ত্রটি ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে, তারা মদ্যপান করেছেন। বাসচালকেরা বুঝতে পারছিলেন না যে কী ভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে। তখন তারা পুলিশকর্মীদের জানান, দুপুরে কাঁঠাল খেয়েছিলেন, মদ্যপান করেননি।
উল্লেখ্য, কাঁঠালের মধ্যে শকর্রা বা চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। শর্করা বা চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় অনেক সময় এটি প্রাকৃতিক গাঁজন বা ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। কাঁঠালের মধ্যে যে প্রাকৃতিক চিনি বা ফ্রুকটোজ়-গ্লুকোজ় রয়েছে, ফার্মেন্টেশনের মাধ্যমে তা ইথানলে রূপান্তরিত হয়। যখন কাঁঠাল খুব বেশি পেকে যায় কিংবা সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা হয় না, তখনই এমন ঘটনা ঘটে। তখন যদি ব্রেথ অ্যানালাইজারে কারও শ্বাস পরীক্ষা করা হয়, তখন সেটি কাঁঠালে থাকা গাঁজানো শর্করাকে অ্যালকোহল হিসাবে চিহ্নিত করে। আর সে জন্যই তিন চালক মদ্যপান না করেও ব্রেথ অ্যানালাইজারে ‘মাতাল’ হিসাবে ধরা পড়েছেন বার বার।
চালকের যখন জানান, তারা কাঁঠাল খেয়েছিলেন, তখন অন্য এক গাড়ির চালক- যিনি ব্রেথ অ্যানালাইজারের পরীক্ষায় পাশ করেছেন, তাঁকে কাঁঠাল খাওয়ানো হয়। তার পর পরীক্ষা করতেই দেখা যায়, ব্রেথ অ্যানালইজার তাকে ‘মাতাল’ বলে ইঙ্গিত করছে।
আসল বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর তিন চালককে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কেএন/টিকে