আধুনিক টি-টোয়েন্টির যুগে দুইশ’র কম সংগ্রহকে বড় পুঁজি বলার সুযোগ নেই। তবে মিরপুরের উইকেটে আগের দুই ম্যাচের প্রেক্ষাপটে তৃতীয় ম্যাচে বড় পুঁজি-ই পেল পাকিস্তান। তাতে হোয়াইটওয়াশের মিশনটা কঠিন হয়ে দাঁড়ালো বাংলাদেশের জন্য।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সাহিবজাদা ফারহান ও হাসান নাওয়াজের ঝোড়ো ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান সংগ্রহ করলো পাকিস্তান। সতীর্থদের খরুচে বোলিংয়ের দিনে লাল সবুজদের পক্ষে দারুণ বোলিং করে ২ উইকেট নেন নাসুম আহমেদ। ৩৮ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ।
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ম্যাচে নির্ভার থাকার সুযোগ নেই লাল সবুজদের। গত মে-জুন মাসে লাহোরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে হোয়াইওয়াশ হয়েছিল লিটনের দল। এবার সুযোগ এসেছে প্রতিশোধ তুলে নেয়ার। তাছাড়া র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটিও কাজে লাগাতে চায় স্বাগতিকরা। তবে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেনি লিটনের দল। প্রথম দুই ম্যাচে যেখানে আগে ব্যাট করা দল ১১০ ও ১৩৩ রানের পুঁজি পেয়েছিল, সেখানে আজ সংগ্রহটা ১৭৮।
এদিন ফখর জামানের জায়গায় সুযোগ পেয়ে আস্থার প্রতিদান দেন সাহিবজাদা ফারহান। ২৯ বয়সী এ ব্যাটার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে চাপে রাখেন টাইগার বোলারদের। তার কল্যাণে ছয় ম্যাচ পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ রান ছাড়ায় পাকিস্তান। ৬ ওভারে ফারহানের ৩৭ আর সাইম আইয়ুবের ১৪ রানের কল্যাণে পাকিস্তানের খাতায় যোগ হয় ৫৭ রান।
অষ্টম ওভারে গিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ততক্ষণে উদ্বোধনী জুটিতে পাকিস্তানের রান ৮২। ১৫ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২১ রান করে নাসুম আহমেদের বলে শামীম হোসেনকে ক্যাচ দেন সাইম। তবে অপরপ্রান্তে দাপট বজায় রেখে ১২ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন ফারহান। শেষ পর্যন্ত ৪১ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৩ রান করে দ্বাদশ ওভারে বিদায় নেন তিনি। এবারও লাল সবুজদের উইকেট এনে দেন নাসুম।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রানের গতি কিছুটা কমে পাকিস্তানের। ১৪ বলে ৫ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন মোহাম্মদ হারিস। তবে পরক্ষণেই সেটা পুষিয়ে দেন হাসান নাওয়াজ। শরিফুল ইসলামের বলে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ১৭ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারের মারে ৩৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন এ ব্যাটার। এরপর ক্রিজে এসে স্থায়ী হতে পারেননি হুসাইন তালাত। ৪ বলে ১ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে কট বিহাউন্ড হন তিনি।
শেষদিকে ফারহান ও হাসান নাওয়াজের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৬ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারের মারে ২৭ রান করেন তিনি। অধিনায়ক সালমান আলী আঘা ৯ বলে ১ ছক্কার মারে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।
টাইগার বোলারদের মধ্যে এদিন সবচেয়ে খরুচে ছিলেন শরিফুল ইসলাম। ৪ ওভার বল করে ৩৯ রান দিয়ে তিনি ১ উইকেট নেন। সবচেয়ে মিতব্যয়ী নাসুম ৪ ওভারে ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ২২ রান। অবশ্য ১৯তম ওভারে এসে ১৯ রান না নিলে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলার থাকতেন সাইফউদ্দিন। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তিনি নেন ১ উইকেট।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ ওভারে ২ উইকেটে ১৪ রান।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটের জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ রানের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
টিকে/