ফর্সা বনাম শ্যামলা—এই চেনা বর্ণবৈষম্যের গল্প আজও থেমে নেই। ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ রুবিনা দিলৈক এক কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হলেন তাঁর যমজ সন্তানদের জন্মের পরে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে কন্যাসন্তানের মা হয়েছেন রুবিনা। এক নয়, একসঙ্গে দুই মেয়ের মা। অভিনব শুক্লার সঙ্গে জীবনের এই নতুন অধ্যায় শুরু করার পর একগুচ্ছ ভালোবাসা যেমন পেয়েছেন, তেমনই শিকার হয়েছেন সমাজের সেই পুরনো ছাঁচের চোখ রাঙানিরও।
ডিসেম্বরে বলিউডি স্টাইলে মেয়েদের প্রথমবার সকলের সামনে আনেন রুবিনা-অভিনব। দেখতে প্রায় একই রকম হলেও, দুই মেয়ের গায়ের রঙে রয়েছে অল্প একটা ফারাক। আর তাতেই যেন শুরু হয়ে গেল অপ্রাসঙ্গিক তুলনা আর অবাঞ্ছিত টিপ্পনির পালা। আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পরিচিতজনেরা কেউ কেউ নাকি এমনও বলেছেন, এক মেয়ের গায়ের রং ফর্সা করার জন্য কী কী গালে ঘষতে হবে! কেউ দিয়েছেন বেসন লাগানোর উপদেশ।
এই কুরুচিকর মন্তব্যে ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি ‘বিগ বস্’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “আমার দুই মেয়েই সুন্দর। ওদের নিয়ে কেউ যেন বাড়ি এসে তুলনা না করে। আমি এই ধরনের মানসিকতা আর সহ্য করব না।” তিনি আরও বলেন, “আমি যেমন করে ওদের ভালোবাসি, ওরাও যেন সমাজে সম্মান নিয়ে বড় হয়ে উঠতে পারে।”
মাতৃত্বের জার্নিতে বারবার সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বহু নারীকে। রুবিনার এই প্রতিবাদ সেই রূঢ় বাস্তবকেই সামনে আনল। গায়ের রঙের ভিত্তিতে মানুষের মূল্য নির্ধারণ যে এখনও অনেকের মন থেকে মুছে যায়নি, তা যেন বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মা হওয়ার খবর প্রথমে গোপনই রেখেছিলেন রুবিনা। এমনকি, প্রথম তিন মাস পরিবারের সঙ্গেও তা ভাগ করেননি তিনি। পরে নিজের ব্লগে জানান, যমজ সন্তান জন্ম দিতে চলেছেন, তা তিনি নিজেও জানতে পারেননি প্রথমে। কিন্তু সেই অবাক করা মুহূর্তের পর তিনি যেন নতুন করে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। মাতৃত্বের ছবি, আনন্দ, অপেক্ষা—সবকিছু শেয়ার করেছেন সমাজমাধ্যমে। কিন্তু সেই আনন্দের মাঝেই যে এত কটাক্ষ জুড়ে বসবে, তা কি ভাবতে পেরেছিলেন রুবিনা?
রঙ নয়, ভালোবাসাই আসল—এবার যেন ফের সেই বার্তাই দিলেন রুবিনা।