রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রণীত ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘জনবৈরী ড্যাপ, বৈষম্যপূর্ণ পরিকল্পনা: নিম্ন নাগরিক বাসযোগ্যতা ও বিপন্ন পরিবেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ড্যাপের ১২টি আইনগত ও তথ্যগত ত্রুটি তুলে ধরা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, ঢাকাকে বাঁচাতে হলে এই ড্যাপ এখনই বাতিল করা দরকার। সংশোধিত জনবান্ধব নতুন কার্যকর ড্যাপ প্রণয়ন করতে হবে।
তারা বলেন, ড্যাপ প্রণয়নের মাধ্যমে জলাধারের আইন ভঙ্গ, কৃষি জমি ভরাট ও ভবন নির্মাণে বৈষম্যসহ নানা বৈষম্য বাস্তবায়িত হচ্ছে। বৈষম্য দূরীকরণে ডিজিটাল ভূমি ব্যবহার মহাপরিকল্পনাসহ জলবায়ু পরিবর্তন ও এসডিজিএস এর যথাযথ সংযোজন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা। এসময় বৈষম্যের পরিকল্পনা তৈরিতে জড়িতদের শাস্তির দাবিও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ড. মাসুদ উর রশিদ। আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি স্থপতি ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ, সহসভাপতি (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) স্থপতি খান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, সহসভাপতি (জাতীয় বিষয়াদি) স্থপতি নওয়াজীশ মাহবুব, সম্পাদক (পেশা) স্থপতি ওয়াহিদ আসিফ প্রমুখ।
চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বর্তমান স্ট্রাকচার প্ল্যান ও তিনধাপভিত্তিক মহাপরিকল্পনার সর্বশেষ তৃতীয় ধাপের গেজেটকৃত ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) বাতিল করা; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আইনের সঠিক ও যৌক্তিক বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল ও সহজলভ্য ভূমি ব্যবহার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন; প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে দুর্যোগ সহনীয় একটি অংশগ্রহণমূলক ও হালনাগাদ মৌজাভিত্তিক ড্যাপ তৈরি এবং তা প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পর্যালোচনা ও পরিচালনা করা এবং বৃহত্তর ঢাকা মহানগরীসহ গাজীপুর, সাভার, কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা নিয়ে অবিলম্বে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগ সহনশীলতা বিবেচনায় নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক, পরিবেশবান্ধব, জনবান্ধব ও বৈষম্যহীন আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তিনধাপ ভিত্তিক ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন, যেখানে সরকারের ক্লাইমেট চেঞ্জ, এসডিজি, সেনডিয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট, জিরো ইমিশনস, ডি-কার্বোনাইজেশন ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির যথাযথ সংযোজন নিশ্চিত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, আমরা বহুদিন ধরে রাজউকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো প্রতিফলন পাইনি। তাই আজ জনগণের দাবি ও অধিকার তুলে ধরতে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। জনদুর্ভোগ এড়াতে, ভবিষ্যতের ঢাকা বাঁচাতে, বাসযোগ্য নগর গড়তে এবং নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লক্ষ মানুষের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ জনগণই পারে টেকসই, ন্যায্য ও সমৃদ্ধ ঢাকা গড়ে তুলতে।
কেএন/টিকে