বিদেশ থেকে ভাড়া করা লোক এনে দেশ চালানো যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রধানরা দ্বৈত নাগরিক। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভার্চুয়ালি প্রধান, প্রতিদিনের মিটিংগুলোর সভাপতিত্ব করা আলী রিয়াজ, তার প্রধান সহযোগী মনির হায়দার এরা সবাই আমেরিকার নাগরিক।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ কামাল বলেন, ‘উনারা কি এই দেশের লোক? উনাদের শেকড় কি এই দেশে? উনারা কি এই দেশেই থাকবেন শেষ পর্যন্ত? সংস্কার কমিশনে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর আলী রিয়াজ কি এই দেশে থাকবেন? উনি উনার ওখানকার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে আবার ব্যাক করবেন। মনির হায়দার যথারিতি আমেরিকায় ব্যাক করবেন। এখানে কোনো সমস্যা হলে, এই লোকগুলোকে পাব কোথায়? এরা যদি কোনো অন্যায় করে, কোনো ষড়যন্ত্র করে যায়, সে ষড়যন্ত্রের জন্য এদেরকে ধরার কী উপায়, পদ্ধতি আছে? কোনো পদ্ধতি নাই। কাজেই ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে হবে না।
দুই দিন পরে ভাড়া শেষ, তারা চলে যাবে ভাড়ার টাকা নিয়ে।
মাসুদ বলেন, ‘তাদের মধ্যে কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা যেকোনো কাজ করতে পারেন। তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থও করতে পারেন। দুই একজনকে উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে তারা দেশপ্রেমিক কিন্তু তাতে সবার দায় এড়ানো যায় না।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের যে বাড়তি শুল্ক এই বাড়তি শুল্ক আমাদের ওপর ৩৫ শতাংশ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আগে ১৫ শতাংশ দিতাম। তার সঙ্গে আরো বাড়তি ৩৫ শতাংশ। তার মানে আমাদের ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। পোশাক অথবা যেকোনো জিনিস আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে যাই এই টাকা দিতে হবে।
এতটা শুল্ক দিয়ে ওখানকার প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমরা কি টিকে থাকতে পারব?
পোশাক শিল্পে ভিয়েতনামকে দিতে হবে ২০ শতাংশ উল্লেখ করে মাসুদ বলেন, আমাদের দিতে হবে বাড়তি ৩৫ শতাংশ। এখানে তো ১৫ শতাংশের একটা গ্যাপে পড়ে গেলাম। ১৫ শতাংশ বাড়তি দামে ভিয়েতনামের সঙ্গে কম্পিটিশনে পারব? আমাদের পুরো গার্মেন্টস শিল্পে ধস নামবে। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় আট থেকে দশ লাখ লোক একদিনে বেকার হয়ে যাবে। এই শিল্পে যারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন তারা রাস্তায় বসে যাবেন।
সাংবাদিক মাসুদ বলেন, এত বড় একটা ক্রাইসিস আলোচনা করার জন্য আমরা তিন মাস সময় পেয়েছিলাম। আমাদের এখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিল ভাড়াটে খলিলুর রহমান। উনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। উনি ওখানে কেন গেলেন? উনাকে কেন পাঠানো হলো- এটা কেউ জানে না। উনি ওখানে গিয়ে কী করেছেন এটাও কেউ জানে না।’
মাসুদ আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যারা এই জিনিসটা দেখেন তারা উনার সঙ্গে বসবেনই না। বলবে তুমি কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেউ? হু আর ইউ? তুমি এখানে কেন আসছো? এই যে সময়টা ক্ষেপণ হলো, শেষ মুহূর্তে এসে আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা গেলেন, তার সঙ্গে আরো অনেকে গেলেন। এরা এখন দৌড় ঝাঁপ করতেছে। তিন মাস আগে শুরু করলে এই দৌড় ঝাঁপ করতে হতো না। কিন্তু পারলেন না। কারণ এই লোকগুলোর মধ্যে কোনো আন্তরিকতার প্রয়োজন নাই, তারা তো এই দেশের কেউ না। এরা নতুন সরকার আসার পরে এদেশে থাকবে? কেউ থাকবে না। কাজেই এদের কোনো দায় দায়িত্বও নাই।’
টিক/