নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সাত লাখ মানুষের মাত্র একটি মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সেটিকে গোয়ালঘরের সাথে তুলনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।
সম্প্রতি নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক আইডিতে মো. আয়াত হোসেন জুয়েল নামের এক ব্যক্তির পোস্ট শেয়ার করে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হান্নান মাসউদ লিখেন, যা একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে, তা গোয়ালঘর করে রাখা হয়েছে। আগে ছিল এক সিন্ডিকেট এখন আরেকটা। এই সিন্ডিকেট ভাঙার জন্যে দাঁড়াচ্ছি, কিন্তু এরা এতোটাই শক্তিশালী যে এদের কিচ্ছু করা যায় না। মাঠ থেকে প্রতিবাদ চাই, ওপরটা আমি সামলে নেব, কথা দিলাম। বাট এই সিন্ডিকেট ভাঙায় যদি হেল্প না করেন, এই দ্বীপের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অসম্ভব।
মো. আয়াত হোসেন জুয়েল বলেন, হাতিয়া শুধুই একটি দ্বীপ নয়, এটি অবহেলার প্রতীক। সেখানে যাতায়াত ও চিকিৎসা সেবার চরম সংকট রয়েছে। একটু আবহাওয়া খারাপ হলেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, যার কারণে জরুরি রোগী বিশেষ করে প্রসূতিদের জীবন সংকটে পড়ে। নৌপথ বন্ধ থাকায় এক প্রসূতি চিকিৎসা না পেয়ে নবজাতক সন্তানকে হারান।
তিনি আরও বলেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার পরিণতি। দ্বীপে নেই কোনো গাইনি বা সিজারিয়ান বিশেষজ্ঞ, নেই আধুনিক চিকিৎসা। গুরুতর রোগীদের ঝুঁকি নিয়ে নদীপথে যেতে হয় জেলা শহরে। বারবার এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এখনই সময় নিরাপদ যোগাযোগ, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও নদীভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। সরকারের উচ্চমহলের কাছে হাতিয়ার প্রতি অবহেলা দূর করার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম নামের এক স্বেচ্ছাসেবী গণমাধ্যমকে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। সেখানে চিকিৎসকরা টাকার বিনিময়ে প্রাইভেট হাসপাতালের রোগী দেখেন। ভর্তি রোগীদের অবস্থা বেহাল হয়। প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু এখানে দুধভাত। আমরা দ্বীপে জন্ম নিয়ে যেনো পাপ করেছি। আমরা মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত।
এ বিষয়ে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমির মতামত জানতে মুঠোফোন নম্বরে কল দিলে তা রিসিভ করেন মেডিকেল অফিসার ডা. জান্নাতুন নাঈম কেয়া। সিভিল সার্জন ব্যস্ত আছে উল্লেখ করে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তা লিখিত আকারে দিতে হবে। মৌখিক কোনো অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়। যদি লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।