গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল: অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ত্রাণ সহায়তা আটকে দিয়ে ইসরায়েল ‘স্পষ্টভাবেই’ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলে মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ।

দেশটির গণমাধ্যম এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে রোববার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, তা “একেবারেই অমার্জনীয়”। তিনি বলেন, “আমাদের যুদ্ধের নিয়ম রয়েছে, আর তা নির্দোষ মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে তৈরি করা হয়েছে। ইসরায়েল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে - খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করা - তা স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।”

তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক আইন বলছে, কোনও সংঘাতের জন্য নির্দোষ মানুষকে দায়ী করা যায় না।”

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ফ্রান্সের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অ্যালবানিজ বলেন, অস্ট্রেলিয়া এই মুহূর্তে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনায় নেই। তবে যদি টেকসই রাষ্ট্র গঠনের উপযুক্ত শর্ত পূরণ হয়, সেক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনায় আনবে তারা।

তিনি বলেন, “আমরা কোনও প্রতীকী সিদ্ধান্ত নেব না। যদি মনে করি এটাই সঠিক পথ, তাহলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনই কি সময়? আমরা কি খুব শিগগিরই তা করতে যাচ্ছি? না, এখনও না। তবে আমরা গঠনমূলকভাবে এই ইস্যুতে জড়িত থাকব।”

তিনি আরও বলেন, একটি কার্যকর দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য গাজা ও পশ্চিম তীর পুনর্গঠন এবং বসতি স্থাপন সংক্রান্ত বিষয়গুলোরও সমাধান প্রয়োজন।

গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ান এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এক বছরের একটি শিশু হামাস যোদ্ধা নয়। গাজায় বেসামরিক মানুষজনের মৃত্যু ও ভোগান্তি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য ও অমার্জনীয়।”

অঅনাদোলু বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৯ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই সামরিক অভিযান গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে, চরম খাদ্য সংকট তৈরি করেছে এবং পুরো অঞ্চলটিকে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

এছাড়া চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে সীমান্ত বন্ধ ও খাদ্য-ঔষধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে গাজায় দুর্ভিক্ষ আরও প্রকট হয়েছে।

টিকে/ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
একদিন একা একা মরে যাব, পাশে কেউ থাকবে না : প্রিয়াঙ্কা Jul 29, 2025
img
গাজায় পৌঁছাল বোতলভরা খাবার Jul 29, 2025
img
আগামী ১১ দিন নৈরাজ্যের আশঙ্কা ঠেকাতে এসপিদের কাছে এসবির চিঠি Jul 29, 2025
img
পিআর পদ্ধতি বোঝেন না, রাজনীতি করার অধিকার নেই : রেজাউল করীম Jul 29, 2025
img
আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে বিদেশি সহায়তার নির্ভরতা কমানোর আহ্বান Jul 29, 2025
img
বনি আমিনের পোস্ট দেখে জানতে পারলাম দুটি বিয়ে করেছি : হান্নান মাসউদ Jul 29, 2025
img
একমাত্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়ই দায়িত্ব হস্তান্তর হবে, ক্ষমতায় যেই আসুক : আসিফ মাহমুদ Jul 29, 2025
img
ফকিরেরপুল নিয়ে বিপাকে বাফুফে Jul 29, 2025
img
খালেদা জিয়াকে লন্ডন পাঠাতে সরকারকে চিঠি দিল বিএনপি Jul 29, 2025
img
ফারাজ করিমের বাড়ির দরজায় ঝুলছে দুদকের নোটিশ Jul 29, 2025
img
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ হতেই হবে : নাহিদ ইসলাম Jul 29, 2025
img
পুনরায় খাল খনন ও রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি : রিজভী Jul 28, 2025
img
চাঁদাবাজদের পেছনের পৃষ্ঠপোষকদেরও বিচার করতে হবে : তাসনিম জারা Jul 28, 2025
img
সুস্থ আছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ Jul 28, 2025
img
যান্ত্রিক ত্রুটিতে মাঝ আকাশ থেকে ঢাকায় ফিরে এল বিমান Jul 28, 2025
img
সেটে সহ-অভিনেতার গলায় ছুরি ধরেছিলেন সালমান খান Jul 28, 2025
img
শেখ হাসিনার সঙ্গে গ্রুপকলে কথা বলা নিয়ে চাঁদাবাজি Jul 28, 2025
কৌশলে বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো Jul 28, 2025
img
'আমার ওপর ভরসা করেন বলেই সুযোগ পেয়েছি : জয়া আহসান Jul 28, 2025
img
অসুস্থ হয়েও পদযাত্রায় হাসনাত, পথসভা শেষে নিলেন হাসপাতালে চিকিৎসা Jul 28, 2025