জাপানে যুদ্ধের প্রস্তুতি? কুমামোতোয় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতা রুখতে দীর্ঘপাল্লার অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে জাপান। কুমামোতো প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি টাইপ-১২ মিসাইল মোতায়েনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিচ্ছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো গ্রাউন্ড সেল্ফ-ডিফেন্স ফোর্সের (GSDF) কুমামোতোর কেংগুন ক্যাম্পে চলতি অর্থবছরেই বসানো হবে। টাইপ-১২ এর উন্নত সংস্করণটির পাল্লা ১,০০০ কিলোমিটার, যা পূর্ববর্তী সংস্করণের চেয়ে অনেক বেশি। এর মাধ্যমে সরাসরি চীনের উপকূল পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হবে।

এই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ব্যবহার করা হবে ‘স্ট্যান্ডঅফ ক্যাপাবিলিটি’ হিসেবে- অর্থাৎ, শত্রুর হামলার সীমার বাইরে থেকেই প্রতিরক্ষা ও পাল্টা আক্রমণের ব্যবস্থা।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ জাপানের নানসেই দ্বীপপুঞ্জ ঘিরে চীনা সামরিক মহড়া সম্প্রতি বেড়েছে। এ প্রেক্ষিতেই কৌশলগত অবস্থান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২০২৩ অর্থবছর থেকে জাপানে ব্যাপকহারে এই উন্নত টাইপ-১২ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন শুরু হয়। গত বছর টোকিওর দক্ষিণের নিইজিমা দ্বীপে সফলভাবে এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়।

জাপানের সরকারি সূত্রমতে, ভবিষ্যতে কিউশুর ইউফুইন সামরিক ঘাঁটিতে এবং ওকিনাওয়ার কাটসুরেন সহকারী ঘাঁটিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনাও বিবেচনায় রয়েছে। তবে ঠিক কবে এটি বাস্তবায়ন হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। সম্ভবত পরবর্তী অর্থবছর থেকেই তা শুরু হতে পারে।

এই পদক্ষেপ নিয়ে জাপানে কিছু উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, দীর্ঘপাল্লার স্ট্যান্ডঅফ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কারণে জাপানের সামরিক ঘাঁটিগুলো সংঘাতকালে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে। আবার কারও কারও মতে, এই পদক্ষেপ জাপানের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যেখানে স্পষ্ট বলা আছে যে জাপানের আত্মরক্ষাবাহিনী কেবলমাত্র প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা পালন করতে পারবে।

তবে ২০২২ সালে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তিনটি সংশোধিত নীতিমালায় জাপান সরকার স্ট্যান্ডঅফ মিসাইল সক্ষমতাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা কৌশল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাই ভবিষ্যতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তেই পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দুর্যোগ মোকাবিলার চেয়ে প্রশমন বেশি গুরুত্বপূর্ণ : ফারুক ই আজম Sep 17, 2025
img
টিকটকের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা Sep 17, 2025
img
টেকনাফে দেড় লাখ মাদকসহ ৩ জন গ্রেপ্তার Sep 17, 2025
img
হজ ব্যবস্থাপনায় ইন্দো-মালয়েশিয়ান মডেল নতুনত্ব আনতে পারে : ধর্ম উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
বাংলাদেশ পুলিশকে কম্পিউটার উপহার দিল চীনা দূতাবাস Sep 17, 2025
img
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ২০০ জয়ের ইতিহাস গড়লো রিয়াল Sep 17, 2025
ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর Sep 17, 2025
মন্ত্রী-এমপিদের স্বার্থে বন উজাড়, কড়া সমালোচ'না উপদেষ্টা রিজওয়ানার Sep 17, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Sep 17, 2025
img
৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে বরুশিয়ার জয় রুখে দিল জুভেন্টাস Sep 17, 2025
img
জেনে নিন, দেশে স্বর্ণ ও রুপার আজকের বাজারদর Sep 17, 2025
img
আত্মঘাতী গোলে জয় পেল টটেনহ্যাম, আজারবাইজানের ক্লাবের কাছে হারল বেনফিকা Sep 17, 2025
img
গোলাম রাব্বানীর জিএস পদ অবৈধের সুপারিশে রাশেদ খাঁনের প্রতিক্রিয়া Sep 17, 2025
img
ইসরায়েলের সঙ্গে ১ বিলিয়ন ইউরোর অস্ত্রচুক্তি বাতিল করল স্পেন Sep 17, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে: শেহবাজ শরিফ Sep 17, 2025
img
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মার্শেইকে ২-১ গোলে হারাল রিয়াল Sep 17, 2025
img
নাসুমই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন, দাবি তানজিদের Sep 17, 2025
img
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনে ট্রাম্পের ফোন Sep 17, 2025
দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ালো ৩০.৮৯ বিলিয়ন ডলার Sep 17, 2025
ক্রাশের নাম প্রকাশেই ভাইরাল রুকমিনি, জানেন কে সেই লাকি স্টার? Sep 17, 2025