দক্ষিণ ক্যারোলিনার আইকেনের কাছে অবস্থিত পুরোনো পারমাণবিক অস্ত্র কারখানা এলাকায় একটি ভিমরুলের বাসা পাওয়া গেছে। বাসাটিতে অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে দশ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি দপ্তর।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভিমরুলগুলোকে মেরে ফেলার জন্য বাসাটিতে স্প্রে করা হয় এবং পরে সেটিকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য হিসেবে ব্যাগে করে রাখা হয়।তবে ঘটনাস্থলে কোনো জীবিত ভিমরুল পাওয়া যায়নি।’
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই তেজস্ক্রিয়তা কোনো পারমাণবিক বর্জ্য লিক বা ফাঁসের কারণে নয়, বরং এটি ‘অনসাইট লিগ্যাসি রেডিওঅ্যাকটিভ কন্টামিনেশন’ – অর্থাৎ পুরোনো তেজস্ক্রিয় অংশের অবশিষ্টাংশ। স্যাভানা রিভার সাইট (এসআরএস) নামের এই স্থাপনাটি ১৯৫০-এর দশকে পারমাণবিক বোমার জন্য প্লুটোনিয়াম তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো।
এই তেজস্ক্রিয় বাসাটি পাওয়া যায় গত ৩ জুলাই, যখন নিয়মিত রেডিয়েশন পরীক্ষার সময় এটি আবিষ্কৃত হয়।
বাসাটি মিলিয়ন গ্যালন পরিমাণ তরল পারমাণবিক বর্জ্য সংরক্ষণের এক ট্যাংকের কাছাকাছি একটি পোস্টে পাওয়া যায়। যদিও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো বর্জ্য ট্যাংক থেকে কোনো ধরনের লিক হয়নি।
জ্বালানি দপ্তর বলছে, ভিমরুলগুলোর শরীরে বাসার তুলনায় অনেক কম পরিমাণে তেজস্ক্রিয়তা ছিল। সাধারণত ভিমরুলরা তাদের বাসা থেকে কয়েকশ ফুট দূরত্বেই উড়ে বেড়ায়।
যেহেতু এই বাসাটি ৩১০ বর্গমাইলজুড়ে বিস্তৃত এসআরএস স্থাপনার মাঝখানে ছিল, তাই বাইরের পরিবেশে ভিমরুলরা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুব কম।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘কোনো এলাকায় তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া যায়নি। পরিবেশ, কর্মী বা জনসাধারণের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি।’ তবে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এ বিষয়ে সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে। স্যাভানা রিভার সাইট ওয়াচ নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।
সংস্থাটির মুখপাত্র টম ক্লেমেন্টস বলেন, ‘আমি যেন আগুনে পোড়া ভিমরুল! এসআরএস এখনো জানায়নি এই তেজস্ক্রিয়তা কোথা থেকে এলো, কিংবা বর্জ্য ট্যাংক থেকে কোনো গোপন লিক হচ্ছে কি না – যা জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।’ প্রসঙ্গত, এই স্থাপনায় এক সময় ১৬৫ মিলিয়ন গ্যালনেরও বেশি তরল পারমাণবিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে ৪৩টি ভূগর্ভস্থ ট্যাংক ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ৮টি ট্যাংক স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি
এফপি/টিএ