৭ মে, ২০২৫। স্থানীয় সময় মধ্যরাতে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অপারেশন রুমের মনিটরে ভারতের আকাশসীমায় একাধিক যুদ্ধবিমানের গতিবিধি ধরা পড়ে। ভারতের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তানের এয়ার চিফ মার্শাল জহির সিদ্দিকিসে সময় অপারেশন রুমের কাছেই একটি ম্যাট্রাসে অবস্থান করছিলেন।
কাশ্মীরে এক জঙ্গি হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত সরকার ওই হামলার জন্য চিরশত্রু প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং পাল্টা প্রতিশোধের হুমকি দেয়। যদিও ইসলামাবাদ সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে, এরপরও ৭ মে ভোরে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালানো হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠলে এয়ার চিফ মার্শাল সিদ্দিকি পাকিস্তানের চীনের তৈরি ‘জে-১০সি’ যুদ্ধবিমানগুলো আকাশে পাঠানোর নির্দেশ দেন। লক্ষ্য একটাই! ভারতীয় রাফাল যুদ্ধবিমানগুলোকে প্রতিরোধ করা, যা এর আগে কখনও যুদ্ধক্ষেত্রে ভূপাতিত হয়নি।
এক শীর্ষ পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা জানান, তারা স্পষ্টভাবে রাফাল বিমানে আঘাত হানতে চেয়েছিলেন। এক ঘণ্টার এই সংঘর্ষে আনুমানিক ১১০টির মতো যুদ্ধবিমান অংশ নেয়, যা সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় আকাশযুদ্ধ বলে মনে করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, পাকিস্তানের একটি ‘জে-১০সি’ যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া চীনা ‘পিএল-১৫’ মিসাইল একটি রাফাল জেটকে লক্ষ্যভেদ করে। এই ঘটনা সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়, কারণ এটি প্রমাণ করে দেয়—সবক্ষেত্রে পশ্চিমা প্রযুক্তি চীনা অস্ত্রের তুলনায় এগিয়ে নয়।
ভারতীয় কর্মকর্তারা পরে স্বীকার করেন যে গোয়েন্দা বিশ্লেষণে গুরুতর ভুল হয়েছিল। তারা মনে করেছিলেন ‘পিএল-১৫’ মিসাইলের পাল্লা ১৫০ কিলোমিটারের মতো, অথচ বাস্তবে সেটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার বা তার বেশি—যার ফলে রাফালের পাইলটরা নিরাপদ দূরত্বে আছেন ভেবে ভুল করেছিলেন।
এই সংঘর্ষে পাকিস্তান ‘কিল চেইন’ কৌশল ব্যবহার করে, যেখানে যুদ্ধবিমান, নজরদারি বিমান এবং স্থলভিত্তিক সেন্সর ও অস্ত্র ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় থাকে।
পাকিস্তানের নিজস্ব ‘ডেটা লিংক ১৭’ প্রযুক্তি চীনা ‘জে-১০সি’, সুইডিশ তৈরী নজরদারি বিমান এবং স্থলসেনার মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে, যাতে রাডার বন্ধ রেখেও লক্ষ্যবস্তুতে সফল হামলা সম্ভব হয়। ভারতের পক্ষেও এমন একটি সিস্টেম গড়ার কাজ চলছে, তবে বিভিন্ন দেশের যুদ্ধবিমান ব্যবহারের কারণে তা জটিল হয়ে পড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত রাফালে ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, তবে ফরাসি বিমান বাহিনীর প্রধান ও রাফালের নির্মাতা ডেসাল্ট অ্যাভিয়েশনের এক্সিকিউটিভদের মন্তব্য থেকে পরোক্ষভাবে কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
এই ঘটনার প্রভাব পড়ে বাজারেও—ডেসাল্টের শেয়ারের দাম পড়ে যায় এবং রাফালে কেনার বিষয়ে চিন্তা করা ইন্দোনেশিয়া এখন চীনের জে-১০সি কেনার সম্ভাবনা বিবেচনা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি চীনের জন্য একটি কৌশলগত সাফল্য।
এদিকে ভারতের ডেপুটি আর্মি চিফ অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে রাডার ও স্যাটেলাইটসহ বিভিন্ন ‘লাইভ ইনপুট’ পেয়েছিল। যদিও ইসলামাবাদ ও বেইজিং দুই দেশই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সামরিক সহযোগিতা পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ, যা কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়।
এফপি/ টিকে