সিনেমা হলের পর্দায় ঝলমলে স্টার আর সুপারস্টারদের দেখে হাততালি পড়ে, বাহবা জোটে। কিন্তু সেই পর্দার ঝলকে যাঁরা পেছন থেকে ঘাম ঝরান, তাঁদের কথাই ভুলে যাই আমরা— এমনই তীব্র ক্ষোভ ঝাড়লেন অভিনেত্রী দিলরুবা দোয়েল।
রবিবার বিকেলে কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে দোয়েল জানান, “কোটি কোটি টাকার প্রোজেক্ট হয়, অথচ অল্প পারিশ্রমিক দিতে ভুলে যায় তারা। আমি শুধু আমার কথাই বলছি না, ইন্ডাস্ট্রিতে অহরহ এমন ঘটনা ঘটে।”
সম্প্রতি আলোচনায় থাকা পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয়ের বিরুদ্ধে পারিশ্রমিক না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন দোয়েল। ‘বরবাদ’ সিনেমার নির্মাতা হৃদয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও, দোয়েল বলেন, “আমি একজন সিঙ্গেল মাদার। এই পেশাই আমার আয়ের একমাত্র পথ। আমাকে কেউ অসম্মান করতে পারে না।”
ঘটনার বিস্তারিত বলতে গিয়ে জানান, হৃদয়ের সহকারী পরিচালক তাঁকে ডাবিংয়ের জন্য রাতে ডেকেছিলেন। যেতে না পারায় পরদিন সকালে গিয়ে ডাবিং শেষ করেন তিনি। তখন বলা হয় বিকেলে পারিশ্রমিক পাঠানো হবে, কিন্তু তা আর আসেনি। উল্টো শ্রীমঙ্গলে থাকা অবস্থায় তাঁকে আবার ডাবিং সংশোধন করতে বলা হয়, আর অসম্মানজনক ভাষায় প্রশ্ন তোলা হয় তাঁর দায়িত্ববোধ নিয়ে।
“সহকারী পরিচালক আমাকে বললো, দায়িত্ব নিতে না পারলে এতো বড় প্রোজেক্টে কাজ করতে এসেছেন কেন? আমি ভীষণ অসম্মানিত বোধ করেছি,” বলেন দোয়েল। এরপর তাঁকে আর কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি।
শুধু নিজের অভিজ্ঞতাই নয়, অন্যদের দুঃখও উঠে আসে তাঁর কথায়। জানান, ঈদের ঠিক আগে এক মেকআপ আর্টিস্ট তাঁকে কাঁদতে কাঁদতে ফোন করে বলেন, ঘরে খাবার নেই, বেশ কয়েকটা কাজ করেও তিনি পারিশ্রমিক পাননি। দোয়েল তখন নিজের বিকাশ থেকে কিছু টাকা পাঠিয়ে দেন তাঁকে।
তিনি বলেন, “প্রায়ই এমন অভিযোগ ওঠে, কিন্তু এই প্রশ্ন কেউ তোলে না— কেন এসব হয়?”
দোয়েলের মতে, এনওসি বা পারিশ্রমিকের রশিদ না থাকার কারণেই এমন অপেশাদার আচরণ বারবার ঘটে। “দুই টাকা দিলেও তার রশিদ থাকা দরকার। তাহলে অন্তত স্বচ্ছতা থাকবে। আর তখনই এই অন্যায় বন্ধ হবে।”
এসএন