একটি কাঁচের চুড়ি ভাঙ্গার অপরাধে...

রমনীর কাছে কাঁচের চুড়ির মায়া অনেক। তাই বলে এমনটি হয়তো নয়, যে একটি চুড়ি ভাঙ্গার অপরাধে  কাজের মেয়ের হাড়গোড় ভাঙ্গা হবে। হ্যাঁ, এমনটিই ঘটেছে কিশোরগঞ্জের সাদিয়ার বেলায়। সে যে বাসায় কাজ করে সেই মালিক দম্পতির বেদম মারে হাড়গোড় ভাঙ্গার অবস্থা তার।

জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারের বাতাশাপট্টি এলাকায় তানভীর রাফসান সাদলি ও মেহেরুন্নেসা অপি দম্পতির বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন সাদিয়া (১৮)। সোমবার বিকেলে কাজ করার সময় অসাবধনতাবশত চুড়ির আলনা পড়ে গিয়ে একটি চুড়ি ভেঙ্গে যায়। তারপর এই দম্পতির হাতে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন সাদিয়া।

গণমাধ্যমকে সাদিয়া জানান, সোমবার বিকেলে বাসার ওয়্যারড্রপ পরিষ্কার করার সময় অসতর্কতাবশত তার হাতের ধাক্কায় চুড়ি রাখার আলনাটি পড়ে যায়।এতে একটি কাচের চুরি ভেঙে যাওয়ায় তার ওপর নির্যাতন চালান গৃহকর্তী মেহেরুন্নেসা অপি।প্রথমে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ছুরি দিয়ে আঘাত করে চোখের উপড়ে গুরুতর জখম করা হয়।এতেই ক্ষান্ত হননি নিষ্ঠুর গৃহকর্তী অপি।

এরপর গৃহকর্মী সাদিয়ার শরীরে গরম পানিও ঢেলে দেন তিনি।পরে গৃহকর্তা তানভীর রাফসান সাদলি ঘটনা শুনে তিনিও সাদিয়াকে বেধড়ক লাঠিপেটা করেন।এ সময় নিজের আত্মরক্ষার্থে কোনো রকমে বাসা থেকে পালিয়ে রাস্তার কয়েকজনের সহযোগিতা নিয়ে হাসপাতালে যান সাদিয়া।

সাদিয়া বর্তমানে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি।এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দম্পতিকে পুলিশ আটক করেছে।

সাদিয়া আরো জানায়, প্রায়ই তাকে কারণে-অকারণে লাঠিপেটাসহ গরম পানির সেক দেওয়ার মতো বর্বর নির্যাতন করা হয়। এমনকি বাসার সবাই কোথাও বেড়াতে গেলেও সাদিয়াকে তালাবদ্ধ করে রেখে যান তারা।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযুক্ত দম্পতিকে আটক করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফেরদৌস হায়দার জানান, নির্যাতনের শিকার সাদিয়ার শরীরের বিভিন্ন অংশে নির্যাতনের চি‎হ্ন পাওয়া গেছে।তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

 

টাইমস/এমএস 

Share this news on: