রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির বৈঠকের ইঙ্গিত দিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র এবং পুতিনের প্রেস সচিব দিমিত্রি পেসকভ এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আজ সোমবার মস্কোতে ক্রেমলিন দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পেসকভ বলেছেন, সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজের শেষ হলেই হতে পারে পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠক। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ‘শিগগিরই’ এসব প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ না ও হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে পেসকভ বলেন, “বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে যাবতীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষে উপযুক্ত সময়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বৈঠক হবে। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।”
কোন কোন প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হওয়ার পর পুতিন-জেলেনস্কির বৈঠক হতে পারে— সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা আভাস পেসকভ দেননি। তবে গত সাড়ে তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে এটি একটি বড় খবর। কারণ এই প্রথম দুই বৈরী প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনার ব্যাপারে ক্রেমলিন থেকে বলা হলো।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান না করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের আবেদনকে ঘিরে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।
তারপর গত প্রায় সাড়ে তিন বছরে একাধিকবার শান্তি সংলাপে বসেছেন দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা। গত মে মাসে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তৃতীয় বারের মতো শুরু হয়েছে শান্তি সংলাপ। এখনও সেই সংলাপ চলছে।
যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাস পর ‘পুতিন কিংবা তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সঙ্গে কোনো সংলাপে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যাবেন না’ মর্মে একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন জেলেনস্কি। তবে ডিক্রি জারির পরে কয়েক বার জানিয়েছেন যে তিনি পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হয়েছে যে কিয়েভ যদি মস্কোর মূল দাবিগুলো— অর্থাৎ ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়— তাহলেই অবসান ঘটবে যুদ্ধের; পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠকও হবে।
জেলেনস্কি এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবশ্য এখনও এ দু’টি দাবিতে ইতিবাচক সাড়া দেননি, তবে যেহেতু ইস্তাম্বুলে দুই দেশের সংলাপ চলছে এবং যুদ্ধবন্দি বিনিময়সহ কয়েকটি ইস্যুতে একমতও হয়েছে মস্কো-কিয়েভ। ফলে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে।
এসএন