বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ও নির্মাতা গুরু দত্ত তার জন্মের ১০০ বছর পর আজও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রভাবিত করে চলেছেন। ‘পিয়াসা’, ‘কাগজ কা ফুল’সহ অন্যান্য ক্ল্যাসিক সিনেমার এই কিংবদন্তি অভিনেতা ও পরিচালকের প্রভাব রয়েছে বিখ্যাত আধুনিক চলচ্চিত্র নির্মাতা সুধীর মিশ্র, আর বাল্কি কিংবা হানসাল মেহতার উপর। তবে মেহতার মতে দত্ত একজন অভিনেতার চেয়ে অনেক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন।
গুরু দত্তের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘শহীদ’, ‘আলীগড়’, ‘সিটিলাইটস’ এমনকি সাম্প্রতিক সময়ের ‘স্ক্যাম ১৯৯২’, ‘স্কুপ’, ‘দ্য বাকিংহাম মার্ডার্স’খ্যাত নির্মাতা হানসাল মেহতা বলেন, ‘গুরু দত্তের চলচ্চিত্রগুলিতে প্রধান চরিত্রে তার অভিনয় একেবারেই দুর্দান্ত নয়। এটি আমার ব্যক্তিগত, অপ্রিয় মতামত- গুরু দত্ত নিজে একজন দুর্দান্ত অভিনেতা ছিলেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু সেই সময়ে তার সৃষ্টিশীল নৈপুণ্য ও সামগ্রিক সিনেমা ছিল আরও শক্তিশালী। তাই তার ছবি কখনোই কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল না।’
মেহতা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘‘চলচ্চিত্র নির্মাণের অন্যান্য দিকগুলি উৎকর্ষময় হলে একটি নিষ্প্রভ অভিনয়কেও চমৎকার লাগে। ফলে গুরু দত্তের সিনেমার লাইট ডিজাইন, ফ্রেমিং, দৃশ্যগুলি যেভাবে পরিবেশিত হত তাতে তার অভিনয়ের খামতি ধরা পড়ত না। কিন্তু অন্যরা যখন তার ছবির নৈপুণ্যের কথা বলেন, তখন আপনি প্রায়শই বলেন, ‘আরে, অভিনয় এত ভালো না’। কিন্তু সিনেমা সম্পর্কে তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এতটাই শক্তিশালী যে, একজন অভিনেতা হিসেবে তার নিজের অযোগ্যতাকেও ছাপিয়ে যায়।’’
মজার ব্যাপার হলো, গুরু দত্ত পরিচালিত ১৯৫৭ সালের কালজয়ী ট্র্যাজেডি চলচ্চিত্র ‘পিয়াসা’তে প্রধান চরিত্রে তার অভিনয় করার কথা ছিল না। প্রবীণ চিত্রনাট্যকার এবং গীতিকার জাভেদ আখতার ওই অনুষ্ঠানে মেহতার সাথে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, প্রথমে ওই চরিত্রটির জন্য দিলীপ কুমারের সাথে কথা বলেছিলেন গুরু দত্ত। যার ওয়াহিদা রহমান এবং মালা সিনহা অভিনীত একটি প্রেমের ত্রিভুজ গল্পে একজন হতাশ কবির ভূমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল। কিন্তু দিলীপ কুমার ছবিটি ফিরিয়ে দেন, কারণ তিনি সবেমাত্র আরেকটি প্রেমের ত্রিভুজ ট্র্যাজেডি গল্প করেছিলেন (বিমল রায়ের দেবদাস (১৯৫৫), যেখানে সুচিত্রা সেন এবং বৈজয়ন্তীমালা অভিনয় করেন)। এরপর গুরু দত্তই নিজেই পিয়াসা’র নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন।
কেএন/টিকে