মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অপ্রত্যাশিত এক সিদ্ধান্তে শুক্রবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ বাজারে রেকর্ড দামে লেনদেন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এক কিলো ও ১০০ আউন্স ওজনের স্বর্ণবার আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করায় বিশ্ব স্বর্ণবাজারে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১ কেজি ওজনের স্বর্ণের বার রপ্তানির ওপর প্রভাব ফেলবে। ১ কেজি ওজনের স্বর্ণের বারে যুক্তরাষ্ট্র ৩৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বিশ্ববাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০০ ডলারেরও বেশি, যা একদিন আগেও ছিল ৩ হাজার ৩৭২ ডলার।
মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) সংস্থা ঘোষণা করেছে, এসব স্বর্ণবার আমদানিতে শুল্ক প্রযোজ্য হবে—যা বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীত। এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণের ওপর শুল্ক আরোপের ঘটনা।
সাধারণত আর্থিক ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে স্বর্ণ শুল্কমুক্ত থাকে। এমনকি চলতি বছরের এপ্রিলে হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত এক তথ্যে বলা হয়েছিল, স্বর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক শুল্কনীতির বাইরে থাকবে। কিন্তু সিবিপির আকস্মিক এই সিদ্ধান্ত বাজারে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী, ব্যাংক ও রিফাইনারিগুলো শুক্রবার হঠাৎ করেই নতুন শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় তৎপর হয়ে ওঠে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্ব স্বর্ণ বাণিজ্যের ধারা বদলে দিতে পারে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সুইজারল্যান্ড, যা বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণ রপ্তানিকারক দেশ। এর আগে গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র সুইস পণ্যের ওপর ৩৯ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করায় ওয়াশিংটন ও বার্নের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
শুক্রবার নিউইয়র্কের কমেক্স এক্সচেঞ্জে যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ ফিউচার দামে নতুন রেকর্ড গড়ে প্রতি ট্রয় আউন্স ৩ হাজার ৫৩৪ ডলার-এ পৌঁছে যায়, যদিও লন্ডন বাজারে দাম স্থিতিশীল ছিল।
এদিকে ইউবিএসের বিশ্লেষক জোনি টেভেস এ ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত খবর’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাজার যেটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা করছিল, ঠিক সেটিই ঘটেছে।’
ইউটি/টিএ